কৃষি ও প্রকৃতি

মিরসরাইয়ে বরবটির দাম পাওয়ায় কৃষকরা খুশি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বরবটি চাষ ভাগ্য বদলে দিয়েছে অনেক কৃষকের। চলতি মৌসুমে বরবটির ফলন ভালো হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার দামও ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। এতে আগামীতে বরবটি চাষে কৃষকরা আরও আগ্রহী হবেন বলে জানায় উপজেলা কৃষি অফিস।

Advertisement

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশের অন্যতম সবজিভান্ডার হিসেবে পরিচিত মিরসরাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নে এবার ২২০ একর জমিতে বরবটি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশি এবং হাইব্রিড প্রজাতি চাষ করা হয়। এবার দেশি বরবটি চাষ করা হয়েছে বেশি। বর্তমানে কৃষকরা পাইকারি হিসেবে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি করছেন ৪৫-৫০ টাকা। যা গতবছর এ সময়ে মূল্য ছিল ২২-২৫ টাকা। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে কিনে সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে ৭০-৭৫ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর ইউনিয়ন, খৈয়াছরা ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নে বরবটি চাষ করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়।

উপজেলার মধ্যম ওয়াহেদপুর এলাকার সাইফুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি আটিতে এক কেজি বরবটি দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের সদস্য ছাড়াও আশপাশের লোকজন সাহায্য করছে।

Advertisement

সাইফুল্লাহ জানান, গত সপ্তাহে ৩৫০ কেজি বরবটি তিনি বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছেন প্রতিকেজি ৪৫ টাকা করে। এবার এ পর্যন্ত ৫ বাজারে বিক্রি করেছেন। আরও ১ মাস বিক্রি করতে পারবেন। সোমবার ও বৃহস্পতিবার উপজেলার বড়দারোগাহাট বাজারে নিয়ে পাইকারদের কাছে বরবটি বিক্রি করেছেন।

তালবাড়িয়ার কৃষক মোহাম্মদ খানসাব বলেন, ‘বরবটি চাষে প্রচুর শ্রম দিতে হয়। এবার ফলন ভালো হয়েছে। দামও পাওয়া যাচ্ছে ভালো। এবার ২৫ শতক জমিতে বরবটি চাষ করতে খরচ হয়েছে ২৭ হাজার টাকা। প্রায় ৫৫ হাজার টাকা বিক্রি করছি। আরও ২০-২৫ দিন বিক্রি করতে পারব।’

কৃষকরা বরবটি তুলে আটি বেঁধে উপজেলার মিঠাছরা, বড়তাকিয়া, বড়দারোগাহাট, সীতাকুণ্ড, বাড়বকুণ্ড ও শুকলালহাট বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যান। সবচেয়ে বড় বাজার বসে দুইশ বছরের পুরোনো বড়দারোগাহাটে। এখানে বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে কিনে ট্রাকযোগে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যান।

ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ বলেন, ‘আমার ইউনিয়ন সবজি চাষের জন্য বেশি উপযোগী। তাই কৃষকরা বিপুল পরিমাণ সবজি চাষ করে। যদি উপজেলায় হিমাগারের ব্যবস্থা থাকত, তাহলে কৃষকরা সবজি সংরক্ষণ করে ভালো দাম পেত।’

Advertisement

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাজী মো. নুরুল আলম বলেন, ‘মিরসরাইয়ে গত কয়েক বছরের তুলনায় বরবটি চাষ বেড়েছে। প্রায় ২২০ একর জমিতে চাষ হয়েছে। দাম ভালো হওয়ায় চাষ বাড়বে।’

এসইউ/জেআইএম