ক্যাম্পাস

আবারো মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনের দাবি

আবারো মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সরকারের পক্ষ থেকে রুট বদলনো অসম্ভব বলে জানানোর পর আবারো নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে শিক্ষার্থীরা। শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ প্রতিক্রিয়া জানান। এর আগে গত ৭ জানুয়ারি থেকে মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনে আন্দোলন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ গত ২৭ জানুয়ারি তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে। এর পরদিন ২৮ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তন করতে আবারো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেট্রোরেল রুট পরিবর্তন কর আন্দোলনের সমন্বয়ক তাশরীন তাইশা বলেন, ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণেই মূলত প্রাথমিকভাবে নেয়া ঢাবি সংলগ্ন প্রাথমিক রুট বাতিল করা হয়। ঐ রুট শাহবাগ থেকে রোকেয়া হল, শহীদ মিনার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বুয়েট হয়ে চলাচলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। তাহলে আমরা ধরেই নিতে পারি ঢাকা মেডিকেল এবং বুয়েট এর বাধার কারণেই তা বাতিল করা হয়। তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন বলির স্বীকার হবে?তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে ২০১১ সালে ৪ জুলাই তার অফিস সংলগ্ন সভাকক্ষে এ সম্পর্কিত মতবিনিময় সভায় মেট্রোরেলের রুট চূড়ান্ত করা হয়। কিন্তু সেখানে ছাত্রদের কোনো প্রতিনিধি ছিল না। পরমাণু শক্তি কমিশন ও বাংলা একাডেমির মধ্যে মেট্রোরেলের ১৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্টেশন হলে যাত্রীদের আসা-যাওয়ার কারণে সৃষ্টি হবে কৃত্রিম যানজট। এমনকি এই এলাকায় দোকান-পাট বসার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এই স্টেশনের কারণে ঢাবি ক্যাম্পাসের অন্যতম গর্ব ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিকল্প রুট থাকা সত্ত্বেও ঢাবির ভেতর দিয়ে রুট নেয়ার কারণে আমরা বিরোধিতা করছি। মেট্রোরেলের কারণে ক্যাম্পাসের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেখানে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থাপনা জাতীয় জাদুঘর, পাবলিক লাইব্রেরি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি, চারুকলা অনুষদ, সন্ত্রাস বিরোধী রাজু স্মারক ভাস্কর্য, টিএসসি প্রাঙ্গণে অবস্থিত বাংলাদেশে টিকে থাকা একমাত্র গ্রিক স্থাপনা, বাংলা একাডেমি, তিন নেতার মাজার, ঢাকা গেট, দোয়েল চত্বর, কার্জন হল এবং শিশু একাডেমিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে জাতীয় ঐতিহ্য সংরক্ষণ আইনের লঙ্ঘন হবে।মেট্রারেলের প্রকল্প-এর পক্ষ থেকে রুট পরিবর্তনের বাধা সর্ম্পকে বলা হয়েছে, ট্রেনে টার্নিং নেয়ার জন্য একটা বড় জায়গা দরকার, সেটা মৎস্য ভবন এলাকায় নেই। এ ধরনের দ্রুতগতির যানবাহনের দিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২০০ মিটার রেডিয়াস দরকার। ওখানে ৯০ ডিগ্রির কম রেডিয়াস রয়েছে। তাইশা তাশরীন আরো বলেন, মিটার এবং ডিগ্রি নামক দুটি ভিন্ন একক দিয়ে একইসঙ্গে কিভাবে পরিমাপ করা হচ্ছে? এবং প্রস্তাবিত মেট্রোরেলর রুট দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট হয়ে প্রেসক্লাব মোড়ে গেলে তখন ৯০ ডিগ্রি টার্ন কিভাবে নেবে? ঢাবি ক্যাম্পাসের ভেতর দিয়ে মেট্রোরেলের যে রুটটি যাবে তার অনেকখানি কাজ এখনও শেষ হয় নি। তাহলে রুট পরিবর্তনের জন্য আমাদের যে দাবি, তা মানতে কর্তৃপক্ষের বাধা কোথায়?সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আন্দোলনকারীদের রুদ্রনীল রানা, হাসিব মু. আশিক অনুপম দত্ত প্রমুখ।এমএইচ/এসএইচএস/এবিএস

Advertisement