কৃষি ও প্রকৃতি

‘হালদার মাছ’ পেয়ে চবি শিক্ষকের ‘ধন্যবাদ’ পোস্টে তোলপাড়

থালাভর্তি মাছ। তাতে রয়েছে চিংড়ি, পাবদা, বাইম, আইড় ও বেলেসহ বিভিন্ন প্রকারের দেশীয় মাছ। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যক্তিগত আইডি থেকে পোস্ট করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন। সেখানে তিনি লেখেন ‘হালদার তাজা মিশালো মাছ!! ধন্যবাদ জাহাঙ্গীর ভাই।’ এ পোস্টে বোঝা যায়, হালদা নদীর মাছগুলো পাঠানোয় তিনি জাহাঙ্গীর নামে কোনো ব্যক্তিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।

Advertisement

কিন্তু সরকারের অভয়াশ্রম ঘোষিত হালদা নদীর এ মাছ জসিমউদ্দিন কোথায় পেয়েছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা। বছরের যে কোনো সময়ই নদীটি থেকে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। মাছ ধরা বন্ধে উপজেলা প্রশাসন, নৌ-পুলিশ এবং মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে। সেখানে তিনি কীভাবে হালদার মাছ পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।

ফেসবুক পোস্টের এক কমেন্টের বিপরীতে তিনি এ ধরনের মাছের আরও ব্যবস্থা করা যাবে বলে জবাব দিয়েছেন, যা সংশ্লিষ্টদের আরও ভাবাচ্ছে। যদিও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সময় প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করা জসিমউদ্দিনের দাবি, তিনি বাজার থেকে মাছগুলো সংগ্রহ করেছেন।

হালদা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রাতদিন হালদা নদীর মাছ ধরা বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে জসিমউদ্দিনের মতো সচেতন ব্যক্তি কেন হালদার এসব মাছ নিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি হালদা থেকে মাছ ধরার বিষয়ে একপ্রকার উৎসাহ দিলেন এবং তাতে লোকজন হালদার মাছ খেতে উদ্বুদ্ধ হবে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Advertisement

জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুল হুদা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত গেজেট অনুযায়ী হালদা নদী থেকে সারাবছরই মাছ ধরা নিষিদ্ধ। কেউ যদি হালদার মাছ আহরণ করেন তবে তিনি বেআইনি কাজ করেছেন। এছাড়া জানার পর কেউ হালদার মাছ কিনে থাকলে তিনিও বেআইনি কাজ করবেন। কারণ এর মধ্য দিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে উৎসাহিত হবেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদ জসিমউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাছগুলো হাটহাজারী বাজার থেকে কেনা হয়েছে। সেখানে এসব মাছ প্রায় সময় পাওয়া যায়৷ এজন্য আমি বলেছি আরও লাগলে ব্যবস্থা করা যাবে। মাছ পাঠানো ব্যক্তি জাহাঙ্গীর আমার পরিচিত।’

সচেতন ব্যক্তি হয়ে হালদার মাছ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে ওইভাবে চিন্তা করা হয়নি। আপনি বলার পর আমি পোস্টটা ডিলিট করে দিচ্ছি। তবে মাছগুলো হালদার কি-না তা আমি নিজেই নিশ্চিত নই। আশপাশের কোথাও হতে পারে।’

মিজানুর রহমান/এইচএ/এএসএম

Advertisement