স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু : দায়িত্ব কি শুধুই মেডিসিন ও শিশু চিকিৎসক-নার্সদের!

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সবার ছুটি বাতিল করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সম্প্রতি রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বেড়ে যাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

Advertisement

দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী অনেক বেশি। এ সব হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যানুপাতে শয্যা কম হওয়ায় ওয়ার্ডের ফ্লোরে, বারান্দা, সিঁড়িকোঠা ও লিফটের সামনে মাটিতে রোগীদের রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একাধিক সরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, মেডিসন ও শিশু বিভাগেই উপচেপড়া ভিড়। রোগীর সংখ্যানুপাতে চিকিৎসক ও নার্সের অপ্রতুলতায় ভিড় সামাল দিতে এ দুটি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সরা হিমসিম খাচ্ছেন। বিশেষ করে মারাত্মক ডেঙ্গু রোগীদের সামাল দিতে গলদঘর্ম হতে হচ্ছে তাদের।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫ম থেকে ৮ম তলা পর্যন্ত রোগী আর রোগী। নতুন আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করা, পুরোনোদের ব্লাড প্রেসার ও জ্বর মেপে দেখা ও মুমূর্ষু রোগীদের শয্যাপাশে থাকা তাদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠছে। ফলে রোগীর স্বজনদেরকেই শয্যাপাশে থাকতে হচ্ছে। ওয়ার্ড ছাড়া অন্যত্র ফ্যান না থাকায় প্রচণ্ড গরমে রোগী, চিকিৎসক, নার্স ও রোগীর স্বজনদের খুবই কষ্ট হচ্ছে।

Advertisement

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন ও শিশু বিভাগের একাধিক চিকিৎসক ও নার্স বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের সামাল দিতে স্বাস্থ্য বিভাগের ছুটি বাতিলের ঘোষণা দিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু বাস্তবে শুধু মেডিসিন ও শিশু বিভাগের চিকিৎসকরাই খেটে মরছেন। অন্যান্য বিভাগে রোগীর তেমন চাপ না থাকলেও তারা ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দিতে এগিয়ে আসছেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অন্যদের কাজ করতে নির্দেশনা দিচ্ছে না। তাদের প্রশ্ন-ডেঙ্গু রোগীর সামলানো কি শুধু মেডিসিন ও শিশু বিভাগের চিকিৎসক-নার্সদেরই দায়িত্ব! অন্যান্য সরকারি হাসপাতালেও একই চিত্র দেখা গেছে। কেবল মেডিসিন ও শিশু বিভাগেই রোগীর চাপ বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুসারে, চলতি বছর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ হাজার ১১১ জন ও মিটফোর্ড হাসপাতাল ১ হাজার ৪৭৪ ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগ গত দুই সপ্তাহেরও কম সময় ভর্তি হন। গত ২৪ ঘণ্টায়ও এ দুটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে যথাক্রমে ১৮৩ ও ১০২ জন।

এমইউ/এনডিএস/জেআইএম

Advertisement