খেলাধুলা

সেমিতে অপ্রতিরোধ্য অস্ট্রেলিয়াকে রুখতে পারবে কি ইংল্যান্ড?

খেলার মাঠে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা আজকের নয়। বহুকাল আগে থেকেই দু'দলের মধ্যে রেষারেষি। যে কারণে মাঠের বাইরেও এ দু'দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে লেগে থাকে কথার যুদ্ধ। সম্পর্কটা যেন সাপে-নেউলের মতো। আর এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দলই আজ (বৃহস্পতিবার) একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বে পরম আকাঙ্ক্ষিত বিশ্বকাপের ফাইনালের টিকিটের জন্য।

Advertisement

যেহেতু নকআউট ম্যাচ সেহেতু ম্যাচের আগে কাউকে স্পষ্টভাবে এগিয়ে রাখা যাচ্ছে। তবে যদি ইতিহাসের পাতা উল্টানো হয় বা পরিসংখ্যান টানা হয় তাহলে ইংল্যান্ডের চেয়ে ফেবারিট অস্ট্রেলিয়াই। বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ করে নিজেদের সেই চিরচেনা রূপ ফিরে পাওয়া অস্ট্রেলিয়া আসর এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের আরও শক্তিশালী গড়ে তুলেছে। যদিও প্রথম পর্বের শেষ ম্যাচে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরেছে। এরপরও মনস্তাত্ত্বিকভাবে ইংলিশদের চেয়ে এগিয়েই রয়েছে অসিরা।

সবচেয়ে আশ্চর্যের তথ্য হলো, বিশ্বকাপের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা সেমিতে উঠলেই যেন তাদের ফাইনাল নিশ্চিত থাকে। অর্থাৎ, এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপ ইতিহাসে অস্ট্রেলিয়া কখনো সেমিফাইনাল হারেনি। এর আগে, মোট ৬টি সেমিফাইনাল খেলে ৬ বারই ফাইনালের টিকিট কেটেছিল তারা। অ্যারন ফিঞ্চের দলের সামনে সুযোগ এই রেকর্ডকে এখন ৭ করার।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়েও এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ১৪৮ বারের দেখায় ইংল্যান্ডের ৬১ জয়ের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ৮২ ম্যাচে। এদিকে সবশেষ দেখায়, অর্থাৎ বিশ্বকাপের প্রথম পর্বের ম্যাচেও স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের হাসি হাসে অসিরা।

Advertisement

জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় অস্ত্র হবেন পেসার মিচেল স্টার্ক। এরইমধ্যে ২৬ উইকেট তুলে নিয়ে এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট তুলে নেয়া স্বদেশী গ্লেন ম্যাকগ্রার পাশে নাম লিখিয়েছেন তিনি। আগুনে বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে ছারখার করার পাশাপাশি এককভাবে এই রেকর্ড নিজের দখলে নিতে মরিয়া স্টার্ক।

তবে ইনজুরি খানিকটা হলেও ভোগাচ্ছে বর্তমান বিশ্বকাপজয়ীদের। ইনজুরিতে পড়ে এরইমধ্যে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে উসমান খাজা, শন মার্শদের। তাদের পরিবর্তে স্কোয়াডে ডাক পেয়েছেন পিটার হ্যান্ডসকম্ব ও ম্যাথু ওয়েড। এছাড়াও ফর্মে নেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তাই আজ গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে একাদশের বাইরে থাকতে হতে পারে তাকে।

এদিকে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে হলে নিজেদের সেরাটা দেয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই ইংল্যান্ডের সামনে। টপ-অর্ডার, মিডল-অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা সবাই আছে রানে। বোলাররাও আছে ছন্দে। কিন্তু শুধু ছন্দে থাকলেই তো হবে না। চাপটাকে বগলদাবা করে বুক চিতিয়ে লড়তে হবে। অতীতে যা করতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে থ্রি-লায়ন্সরা। বিশ্ব আসরে ৫ সেমিফাইনাল খেলে ২ হার সেকথার প্রমাণ না দিলেও, ফাইনালে গেলেই তাদের হার প্রশ্ন তোলে তাদের চাপ সামলানোর সামর্থ্য নিয়ে।

যদিও ২০১৫ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়ার পর আমূল বদলে গেছে ইংলিশ ক্রিকেটের চেহারা। আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের নতুন এক সংজ্ঞা বিশ্ববাসীকে উপহার দিয়েছে। ২০১৫ সালের এপ্রিলের পর ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ৬৪ জয় তাদের। এর মধ্যে বেশ কয়েকবার ৪০০ রানের কোটাও পার করেছে তারা। তাই দলগত পারফরম্যান্সের কোনো বিকল্প নেই ইংলিশদের সামনে।

Advertisement

তবে অস্ট্রেলিয়াকে বধে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হতে পারে তাদের ঘরের মাঠে আগত সমর্থকরা। ইংল্যান্ড অধিনায়ক এউইন মরগ্যানও দারুণ রোমাঞ্চিত ভক্তদের সমর্থক দেখে। ম্যাচের আগে তিনি বলেছেন, বিশ্বকাপের শুরু থেকেই আমরা যে সমর্থক পেয়ে এসেছি তা অবিশ্বাস্য। আমি আমার জীবনে কখনো এরকম কিছু দেখিনি।'

এসএস/জেআইএম