শিক্ষা

জিপিএ-৪ বাস্তবায়ন ‘এ বছর নয়’

জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (জিপিএ) পদ্ধতির সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ এর পরিবর্তন আপাতত হচ্ছে না। প্রস্তুতির অভাবে সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম পিছিয়েছে।

Advertisement

সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) থেকে বিষয়টি বাস্তবায়নের চিন্তা থাকলেও সেটা আপাতত সম্ভব হচ্ছে না। ২০২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে জিপিএ’র পরিবর্তন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হতে পারে। তবে কোন পরীক্ষা থেকে তা কার্যকর হবে সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।

আরও পড়ুন >> হঠাৎ শিক্ষা ভবনে শিক্ষামন্ত্রী, চমকে গেলেন সবাই

 

প্রসঙ্গত, গত ১০ জুন মন্ত্রণালয়ে সব বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। ওই বৈঠকে বর্তমানে পাবলিক পরীক্ষার ফল সর্বোচ্চ ধাপ জিপিএ-৫ এর পরিবর্তে জিপিএ-৪ করার বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে প্রস্তাবনা দিতে বলেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। কমিটির ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। গত ২৬ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যানদের সঙ্গে পরবর্তী বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর হাতে জিপিএ পরিবর্তনের একাধিক প্রস্তাব তুলে দেয়া হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন >> পরীক্ষার গ্রেড পরিবর্তনের চার প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, গ্রেড পরিবর্তনে প্রস্তাবনা বোর্ড চেয়ারম্যানরা শিক্ষামন্ত্রীর হাতে তুলে দেয়ার পর এ বিষয়ে তড়িঘড়ি না করতে অনুরোধ জানান। ওই সভায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পরিবর্তন একটি বড় ধরনের কাজ, তাই সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে কার্যকর হবে। এ বিষয়ে আরও গভীর পর্যবেক্ষণমূলক কাজ করার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

বোর্ড চেয়ারম্যানদের দেয়া নতুন প্রস্তাবনায় দেখা গেছে, পাবলিক পরীক্ষায় বিশ্বের সঙ্গে আমাদের নম্বরের শ্রেণি-ব্যাপ্তির সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ কারণে বহির্বিশ্বের সঙ্গে সমন্বয় রেখে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফল পদ্ধতি পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতিতে জিপিএ-৫ পরিবর্তন করে সর্বোচ্চ জিপিএ-৪ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

প্রস্তাবনায় নতুন গ্রেড হিসেবে দেখা গেছে, পরীক্ষায় সর্বোচ্চ পাস নম্বর ১০০ করা হয়েছে। জিপিএ-৫ পরিবর্তন করে তা জিপিএ-৪ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০০ থেকে ৯৫ নম্বর পেলে নতুন গ্রেড হিসেবে ‘এক্সিলেন্স গ্রেড’ যুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তী পাঁচ নম্বর কম ব্যবধানে ‘এ’ প্লাস, ‘এ’, ‘এ’ মাইনাস, ‘বি’ প্লাস, ‘বি’, ‘বি’ মাইনাস, ‘সি’ প্লাস, ‘সি’, ‘সি’ মাইনাস, ‘ডি’ প্লাস ‘ডি’, ‘ডি’ মাইনাস, ‘ই’ প্লাস, ‘ই’, এবং ‘ই’ মাইনাস গ্রেড দেয়া হবে। ফেল হিসেবে ‘এফ’ গ্রেড থাকবে। সর্বনিম্ন পাস নম্বর ৩৩ নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব গ্রেডের সঙ্গে সমন্বয় করে সর্বোচ্চ জিপিএ- ৪ থেকে পরবর্তী গ্রেড নির্ধারণ করা হবে। তবে পাস নম্বর ৪০ বা তার কম করা যায় কি-না, সে প্রস্তাবও করা হয়েছে। এটা ৩৩ নম্বর রাখার পক্ষে অধিকাংশ বোর্ড চেয়ারম্যানরা মতামত দিয়েছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন >> এইচএসসির ফল ১৭ জুলাই

বাংলাদেশে ২০০১ সাল থেকে পাবলিক পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতি চালু হয়। সেখানে ৮০ থেকে ১০০ নম্বরপ্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৫, লেটার গ্রেড এ প্লাস। এটাই সর্বোচ্চ গ্রেড। এরপর ৭০ থেকে ৭৯ নম্বরপ্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৪, লেটার গ্রেড এ। ৬০ থেকে ৬৯ নম্বরপ্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৩ দশমিক ৫০, লেটার গ্রেড এ মাইনাস। ৫০ থেকে ৫৯ নম্বরপ্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ৩, লেটার গ্রেড বি। ৪০ থেকে ৪৯ নম্বরপ্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট ২, লেটার গ্রেড সি। ৩৩ থেকে ৩৯ নম্বরপ্রাপ্তদের গ্রেড পয়েন্ট এক, লেটার গ্রেড ডি। আর শূন্য থেকে ৩২ পাওয়া শিক্ষার্থীদের গ্রেড পয়েন্ট জিরো, লেটার গ্রেড এফ।

জিপিএ-১ অর্জন করলেই তাকে উত্তীর্ণ হিসেবে ধরা হয়। কোনো বিষয়ে এফ গ্রেড না পেলে চতুর্থ বিষয় বাদে সব বিষয়ের প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্টকে গড় করেই একজন শিক্ষার্থীর লেটার গ্রেড নির্ণয় করা হয়। তবে সব বিষয়েই ৮০-এর ওপর নম্বর পাওয়া ফলকে অভিভাবকরা গোল্ডেন জিপিএ-৫ বলে থাকেন। তবে শিক্ষা বোর্ডে এ ধরনের কোনো গ্রেড নেই।

এমএআর/পিআর