ইউরোপে রফতানি করা হচ্ছে রাজশাহীর আম। জেলার বাঘা উপজেলা থেকে এরই মধ্যে ২ দশমিক ৮ টন হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম রফতানি হয়েছে। কেবল বিদেশেই নয়, দেশের বাজারেও বিক্রি হচ্ছে পুরোপুরি রাসায়নিকমুক্ত এসব আম। ভালো দাম পাওয়ায় রফতানিযোগ্য আম চাষে যুক্ত হচ্ছেন চাষিরা।
Advertisement
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, পর্তুগাল, নরওয়ে, ফ্রান্স ও রাশিয়ায় আম রফতানি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২ দশমিক ৮ টন হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম রফতানি হয়েছে। রফতানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে আরও বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু আম।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রফতানিযোগ্য আম চাষ করছেন এখানকার ৫০ জন বাগান মালিক। উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন করছেন তারা। এর আগে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ নিয়েছেন এসব আম চাষি। আম উৎপাদনের পর এসব চাষিদের তালিকাভুক্ত করে দেয়া হয়েছে সনদ।
চাষিরা বলছেন, তাদের বাগানে উৎপাদিত আম শতভাগ নিরাপদ ও ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত। প্রতিটি আমের ওজন ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম। আকর্ষণীয় এসব আম বাছাই করে রফতানি করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রীয় মান নিয়ন্ত্রক সংস্থার ছাড়পত্র নিয়েই দেশের সীমানা পাড়ি দিচ্ছে রাজশাহীর আম।
Advertisement
কেবল বিদেশেই নয়, দেশেও চাহিদা বাড়ছে এসব আমের। এরই মধ্যে খ্যাতনামা একটি সুপারসপ পাঁচ টন রাজশাহীর আম নিয়ে গেছে। আম নেয়ার জন্য যোগাযোগ করছে আরও বেশ কয়েকটি সুপারসপ। ভালো দাম পাওয়ায় রফতানিযোগ্য আম চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।
বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লা সুলতান বলেন, চলতি মৌসুমে ৩৩ টন আম বিদেশে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা রয়েছে। তবে ১ জুন থেকে ১ দশমিক ৪ টন করে ২ দশমিক ৮ টন হিমসাগর ও ল্যাংড়া আম বিদেশে রফতানি করা হয়েছে। সব প্রক্রিয়া মেনেই আম রফতানি করছেন চাষিরা।
এদিকে রাজশাহীর আম বাজার এখন হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া ও লক্ষণভোগের দখলে। আগামী ১৬ জুন থেকে বাজারে নামবে আম্রপালি ও ফজলি আম। এরপর মৌসুমের শেষ আম আশ্বিনা নামবে ১৭ জুলাই। পরিপক্ক আম বাজারজাত নিশ্চিতে আম বাজারজাতের এই সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
কয়েক বছরের টানা লোকসান কেটেছে আম চাষিদের। এবার আমের বাজার বেশ জমে উঠেছে। রাজশাহীর আম বাজারগুলোতে প্রতি মণ হিমসাগর ও গোপালভোগ এক হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, ল্যাংড়া ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা, লক্ষণভোগ সাড়ে ৮০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর/এমকেএইচ