খেলাধুলা

লড়াই শুরুর আগে যা বললেন অধিনায়করা

ব্যাট-বলের লড়াই শুরু হবে আগামী ৩০ মে থেকে। লন্ডনের কেনিংটন ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ড মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা। তার আগে আইসিসির পক্ষ থেকে সেরে নেয়া হয়েছে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়কদের কথার লড়াই, করে ফেলা হয়েছে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন।

Advertisement

তবে প্রায় ৪০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা এ সংবাদ সম্মেলনে প্রথাগত প্রশ্নোত্তর পর্বের চেয়ে অধিনায়কদের মধ্যে আড্ডাকেই বড় করে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন সঞ্চালক মার্ক চ্যাপম্যান। যেখানে ফাঁকে ফাঁকে উঠে এসেছে গুরুগম্ভীর কথাবার্তাও।

সব দলের অধিনায়ক জানিয়েছেন বিশ্বকাপে নিজেদের ভাবনার কথা, লক্ষ্য-সম্ভাবনার কথা। সে অনুষ্ঠানে অধিনায়কদের কথার চুম্বকাংশ তুলে ধরা হলো জাগোনিউজের পাঠকদের জন্য:

মাশরাফি বিন মর্তুজা, বাংলাদেশ

Advertisement

তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে দারুণ একটা দল আছে আমাদের। সাম্প্রতিক সময়ে তারা দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলছে এবং সব জায়গাতেই ভালো করছে। কদিন আগে আয়ারল্যান্ডে হয়ে যাওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজেও তারা ভালো করেছে।

আশা করছি ২ জুন ফাফের দলের (দক্ষিণ আফ্রিকা) বিপক্ষেও তারা ভালো করবে, দারুণ একটা শুরু এনে দেবে। ক্রিকেটে নিজেদের দিনে যেকোনো দলকেই হারিয়ে দেওয়া সম্ভব। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দলের জন্য, আমরা যদি শুরুটা ভালো করি, যদি সেটা ধরে রাখি তাহলে আমরা অনেক দূরই যেতে পারব। তবে সে জন্য শুরুটা খুব ভালো হতে হবে।

বিরাট কোহলি, ভারত

বিশ্বকাপে সবাই বড় রানের কথা বলছে, (ইয়ন মরগ্যানের দিকে ইঙ্গিত করে) ইংল্যান্ডের ওরা তো ৫০০ রানের আশায় ঘুম হারাম করে ফেলেছে। দেশেও সংবাদ সম্মেলনে আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল এ ব্যাপারে। আমি বলেছি বিশ্বকাপে ২৬০-২৭০ রান করাও ৩৫০-৩৬০ রান করার মতোই কঠিন হবে। কারণ এটা বিশ্বকাপ, সবাইকেই চাপের মুখে খেলতে হবে, সবাই জেতার জন্য সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করবে। আমি বলছি এই বিশ্বকাপে ২৫০ রান করেও কোনো দল ম্যাচ বাঁচাবে। এটাই হবে এই বিশ্বকাপের সৌন্দর্য।

Advertisement

অ্যারন ফিঞ্চ, অস্ট্রেলিয়া

আমরা বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন- এটা যেমন সত্যি, তেমনি এটাও সত্যি যে নতুন একটা আসর শুরু হচ্ছে। সবকিছুই একেবারে গোড়া থেকে শুরু করতে হবে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে বিশ্বকাপজয়ী দলের ছয়জনকে এখনো আমাদের সঙ্গে পাচ্ছি। তবে এটা নতুন আরেকটি বিশ্বকাপ, একবার মাঠে নেমে খেলা শুরু করলে চাপ তখন পেয়ে বসবে। তবে আশা করছি দারুণ একটা বিশ্বকাপই হতে যাচ্ছে এবার।

ইয়ন মরগ্যান, ইংল্যান্ড

আমি মনে করি না কেউ কারো চেয়ে এগিয়ে আছে এখানে। এটা ১০ দলের বিশ্বকাপ, বিশ্বের সেরা ১০টি দল খেলছে। আসরটা প্রচণ্ড প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। আশা করছি খুব ভালো ক্রিকেট হবে বিশ্বকাপে। খেলতে নামার জন্য খুবই মুখিয়ে আছি।

স্বাগতিক হিসেবে একটা সুবিধা তো আছেই! আমরা বেশিদিন নিজেদের বাসায় থাকতে পেরেছি, নিজেদের পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পেরেছি। অনেক দিন ধরেই আমরা এই বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা নিয়েছি।

সরফরাজ আহমেদ, পাকিস্তান

সবগুলো দলই খুব ভারসাম্যপূর্ণ, খুব ভালো দল। সবার জন্যই শুভ কামনা, আশা করছি দর্শকরা দারুণ সব ম্যাচ উপভোগ করতে পারবেন। ইংল্যান্ডে পাকিস্তানের পারফরম্যান্স বরাবরই ভালো। ১৯৯২ সালে টেস্ট সিরিজের কথা যদি ধরি, এরপর ২০০৯ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টি, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি সব মিলিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানের রেকর্ড বেশ ভালো। এই বিশ্বকাপেও আমরা খুব ভালো করার ব্যাপারে আশাবাদী।

দিমুথ করুনারাত্নে, শ্রীলঙ্কা

আমরা গত কয়েক বছরে অনেক ক্রিকেট খেলেছি। ইংল্যান্ডে খেলারও আমাদের অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আশা করছি আমরা ভালোই করব। প্রস্তুতি আর আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য আমরা একটু আগেভাগেই ইংল্যান্ডে চলে এসেছিলাম। কন্ডিশনের সঙ্গে আমরা বেশ মানিয়ে নিয়েছি। আমরা নিজেদের সেরা অবস্থায়ই আছি, আশা করছি ভালো করব।

কেন উইলিয়ামসন, নিউজিল্যান্ড

গত বিশ্বকাপে যারা আমাদের দলে ছিল, তাদের অনেকেই এবারও আছে। তাদের অভিজ্ঞতাটা আমাদের জন্য বাড়তি পাওনা। তবে খুব স্বাভাবিকভাবেই, চার বছরের পার্থক্যে বেশ কিছু নতুন খেলোয়াড় দলে জায়গা করে নিয়েছে। একটা ব্যাপার আমার কাছে মনে হয়েছে যে র‌্যাংকিং, ফেভারিট, আন্ডারডগ- এসব নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। তবে আমি বলতে চাই সবগুলো দলই অনেক ভারসাম্যপূর্ণ আর নির্দিষ্ট দিনে যেকোনো কিছুই হতে পারে।

ফাফ ডু প্লেসিস, দক্ষিণ আফ্রিকা

ঘরে কিংবা বাইরে গত কয়েক বছরে খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট হচ্ছে সবখানে। এমন নয় যে শুধু ঘরের মাঠেই একটা দল ভালো খেলছে। তবে বিশ্বকাপের মতো একটা টুর্নামেন্ট যেটা চার বছরে একবার আসে সেটায় ভালো করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরাও অপেক্ষায় আছি মাঠে নেমে পড়ার। আর মাশরাফির ইচ্ছেটা (দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর) পূরণ হতে দেব না।

গুলবদিন নাইব, আফগানিস্তান

এইখানে শীর্ষ সব দলের সঙ্গে থাকতে পেরে, শীর্ষ সব ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার সুযোগ পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা খুবই অধীরভাবে অপেক্ষা করছি মাঠে নামার, নিজেদের সেরাটা দেওয়ার, আফগানিস্তানকে প্রতিনিধিত্ব করার। আশা করি আমরা ভালোভাবেই সেটা করতে পারব আর নিজেদের সেরা খেলাটা খেলব।

জেসন হোল্ডার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ

খুবই রোমাঞ্চকর একটা বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। আগে বিশ্বকাপে যেমন হতো যে একটা দল চার-পাঁচটা ম্যাচ খেলত। এবার আরো কয়েকটি ম্যাচ বেশি খেলতে হবে। এখন ফরম্যাটটা বেশ জমজমাট হয়েছে। বিশ্বকাপে এখন সবার সঙ্গে সবার খেলা, তাই শেষ ম্যাচে যে দলটা ট্রফি হাতে উদ্‌যাপন করবে তারা জানবে যে কতটা কষ্টকর ছিল পুরো যাত্রাটা। লম্বা টুর্নামেন্ট, আমাদের প্রথম ভাগটা ভালোভাবে শেষ করতে হবে, এরপর দেখতে হবে সামনে কী আছে।

এসএএস/এমএস