বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না কমালে আইনি প্রক্রিয়ায় যাবে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা এম সামছুল আলম।তিনি বলেন, তেলের দরপতন সমন্বয় না করে অন্যায়ভাবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং গ্যাসের দাম ২৬ দশমিক ২৯ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণাকে সম্পূর্ণ বেআইনি ও অযৌক্তিক। প্রসঙ্গত, গত ২৭ আগস্ট বিইআরসি গ্যাস ও বিদ্যুতের দামবৃদ্ধির আদেশ দিয়েছে যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।সামছুল আলম বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)’র কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে দাম কমানোর প্রস্তাব জানাবো আমরা। এতে যদি তারা দাম না কমায় তাহলে ক্যাব আইনি প্রক্রিয়ার যাবে।সংবাদ সম্মেলনে, ভোক্তাদের স্বার্থ ও অধিকার সুরক্ষায় ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করে ক্যাব।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য : ভোক্তাদের বিদ্যুতের দাম কমানোর আবেদনের ওপর গণশুনানি করা। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত উন্নয়নে সরকারি বিনিয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিইআরসি’র নিয়ন্ত্রণাধীনে ইউটিলিটির সকল সঞ্চিত অর্থে একটি তহবিল গঠন করা। ইউটিলিটির সুশাসন নিশ্চিত করাসহ কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ইউটিলিটি’র বোর্ডসহ সকল পর্যায়ের নির্বাহী দায়িত্ব থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের সকল কর্মকর্তাদেরকে অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করা। একই সঙ্গে মুনাফার অর্থ ব্যবহারে বিইআরসি’র নিয়ন্ত্রণ থাকতে হবে। শেয়ার বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাত থেকে সরকারের অর্জিত রাজস্বের কমপক্ষে ৫০ শতাংশ এ খাত উন্নয়নে বিনিয়োগের প্রস্তাব। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেল বণ্টন ও বিতরণ এবং দামহার নির্ধারণে ন্যায্যতা ও সমতা নিশ্চিত করার জন্য কৌশলগত নীতি বিইআরসি’কে প্রণয়ন করতে হবে এবং তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানায় ক্যাব।বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর গত ৩১ আগস্ট ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টাকে লেখা খোলা চিঠি দেয় ক্যাব। এতে বলা হয়েছে, বিইআরসি আইনের সাথে সামঞ্জস্যহীন হওয়ায় ওই আদেশ আইনি কর্তৃত্ব বহির্ভূত বলে ভোক্তারা মনে করে।চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোক্তা স্বার্থ ও অধিকার সংরক্ষণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে নিয়োজিত পাবলিক ও প্রাইভেট সেক্টরের মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা সৃষ্টি এবং সমতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ওই আদেশে বিবেচিত না হওয়ায় ভোক্তারা সংক্ষুব্ধ। তাছাড়া ইলেকট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃতিতে প্রচারিত হয়েছে যে, সরকার আবারও বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংবাদ ব্রিফিং-এ গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরো বাড়ানো উচিত বলে সংসদীয় কমিটি অভিমত ব্যক্ত করেছে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের বাড়তি দামে অভ্যস্ত হতে হবে। কম দামে দেয়া হয় বলে বিশ্বব্যাংক বকাবকি করে। এসব সংবাদে ভোক্তারা মর্মাহত ও আতংকিত।সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব’র নির্বাহী সদস্য এম মোবাশ্বের আলী ও ড. শাহানা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।এসআই/এসকেডি/পিআর
Advertisement