ক্যাম্পাস

শাবির তরুণদের আবিষ্কার, বাংলায় কথা বলতে পারে রোবট

দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট ‘লি’ আবিষ্কার করলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ তরুণ গবেষক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবটটি বাংলায় কথা বলার পাশাপাশি মানুষের মতো চলাচল করতে পারে। এছাড়া হাত ও পা নাড়ানো এবং অঙ্গভঙ্গি করতে পারে রোবটটি।

Advertisement

সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিমিয়কালে রোবটটি প্রদর্শন করা হয়।

‘আবার আসিয়াছি ফিরে, রোবট হয়ে এই বাংলায়’ স্লোগানে এ রোবটের নামকরণ করা হয় বাংলা স্বরবর্ণ থেকে হারিয়ে যাওয়া লিপি ‘লি’ থেকে, যা দেখতে ৯-এর মতো ছিল। এ বর্ণটিকে স্মরণে রাখতে রোবটটির নামকরণ করা হয়েছে রোবট ‘লি’।

এ রোবট তৈরির নেতৃত্বে ছিলেন ‘ফ্রাইডে ল্যাবের’ টিম লিডার ও শাবির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০০৯-১০ সেশনের শিক্ষার্থী নওশাদ সজীব।

Advertisement

তিনি বলেন, ‘লি’ দেশের প্রথম পায়ে হাঁটা রোবট। এ রোবট তৈরিতে সময় লেগেছে প্রায় তিন বছর। অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ডিভিশন। গত ২০ এপ্রিল ‘সাস্ট টেক ফেস্ট’ প্রতিযোগিতায় রোবটটির উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

ফ্রাইডে ল্যাবের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অধ্যাপক ও লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

গত ২০ এপ্রিল রোবটটির উদ্বোধন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, সিএসই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জহিরুল ইসলাম প্রমুখ। ওই সময় রোবটটি আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে ডান হাত উঁচু করে স্যালুট দিয়ে সম্মান দেখায় এবং হাঁটে।

এছাড়া টিমের অন্য সদস্যরা হলেন- স্থাপত্য বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রুপক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের সাইফুল ইসলাম, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম ও জিনিয়া সুলতানা জ্যোতি।

Advertisement

নওশাদ সজীব বলেন, ‘লি’ রোবটের সঙ্গে জাভা ও পাইথন নিয়ে কাজ করা হয়েছে। আমাদের এ রোবট তৈরির মূল উদ্দেশ্য রোবটকে হাঁটাচলা করানোর সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা পরিচালনা করা। আমি মূলত রোবটের প্রোগ্রামিংয়ের অংশ নিয়ে কাজ করেছি।

এ রোবটকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে যে ধরনের উপাদান বা যন্ত্রপাতির প্রয়োজন তা বাইরের দেশ থেকে আনতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এজন্য আরও অনেক টাকার প্রয়োজন।

টিমের সদস্য মেহেদী হাসান রুপক বলেন, ‘আমি রোবটের কাঠামো ডিজাইনে কাজ করেছি। এটি আমাদের সবার আবিষ্কার।’

সাইফুল ইসলাম বলেন, আগের যে রোবট (রিবো) তৈরি করা হয়েছিল সেটা হাঁটাচলা করতে পারে না। আমরা চেয়েছিলাম এমন একটি রোবট তৈরি করতে যেটি হাঁটাচলা করতে পারে।

টিমের আরেক সদস্য জিনিয়া সুলতানা জ্যোতি বলেন, এ রোবটে আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংযুক্ত করেছি। ফলে রোবটটি বাংলায় কথা বলার পাশাপাশি হাত-পা নাড়ানো ও অঙ্গভঙ্গিও করতে পারে। রোবটটিকে গান, কবিতা ইত্যাদি শেখানো হয়েছে। সাধারণত বাসাবাড়ি ও অফিসে ব্যবহার করা হয় এমন সব ভাষা লিখে শেখানো হয়েছে রোবটটিকে।

এএম/পিআর