রাজধানীর বড় সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন অলি-গলি, ওভার ব্রিজ, গাছপালা, ল্যাম্পপোস্ট, ওয়ালসহ সর্বত্রই পোস্টার ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সব জায়গায় টু-লেট, ভাড়া হবে, বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রচারণামূলক পোস্টার, বিভিন্ন বিজ্ঞপ্তি আর ব্যানারের ছড়াছড়ি। যে কারণে নষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য।
Advertisement
অথচ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) উদ্যোগে স্থাপন করা পোস্টার লাগানোর নির্ধারিত স্থান একেবারেই ফাঁকা দেখা গেছে। সেখানে কোনো পোস্টার বা বিজ্ঞাপন লাগানো নেই। গত বছরের শুরুতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এলাকায় ৫২টি ব্যস্ততম স্থানে পোস্টার লাগানোর জন্য বিশেষ বোর্ডে স্থাপন করেছিল ডিএনসিসি। এসব বোর্ডে নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান তাদের পোস্টার লাগাতে পারবেন। এসব স্থানে সবাই পোস্টার রশিতে টাঙ্গাতে পারবে।
গুলশান উত্তরা, মিরপুর, ফার্মগেট, খামারবাড়ি, মহাখালী, শুটিং ক্লাবসহ এলাকার ব্যস্ততম স্থানে এসব বিলবোর্ড লাগানো আছে। সেখানে ৭ দিনের জন্য একজন ব্যক্তি পোস্টার লাগাতে পারবেন। এখানে পোস্টার লাগালে কোনো টাকা বা চার্জ দিতেও হবে না। শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় এমন উদ্যোগ নিয়েছিল ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। অথচ প্রচারণার অভাবে ডিএনসিসির এমন উদ্যোগে সাড়া দেয়নি নগরবাসী। সচেতনতার অভাবে তারা যত্রতত্র পোস্টার, ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে।
রাজধানীর গুলশান শুটিংক্লাব সংলগ্ন ডিএনসিসির পোস্টার লাগানোর নির্ধারিত স্থানে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে একটিও পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিজ্ঞপ্তি কিছুই নেই। সেখানে লেখা আছে নির্ধারিত স্থান ব্যতীত পোস্টার লাগানো দণ্ডনীয় অপরাধ। অথচ নির্ধারিত স্থানে কেউ পোস্টার না লাগিয়ে যত্রতত্র পোস্টার লাগাচ্ছেন।
Advertisement
সড়কের পাশ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র একটি কোর্সের বিজ্ঞাপনী পোস্টার লাগাচ্ছিলেন নাঈমুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। এখানে কেন এভাবে পোস্টার লাগাচ্ছেন, পোস্টার লাগানোর জন্য তো নির্ধারিত স্থান আছে। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পোস্টার লাগানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা আছে এ বিষয়টিই তো জানি না। ডিএনসিসির উচিত ছিল এ বিষয়ে প্রচারণা চালানো যে পোস্টার লাগানোর জন্য তারা আলাদা জায়গা তৈরি করেছেন। তবেই তো আমাদের মতো মানুষরা উদ্বুদ্ধ হয়ে নির্ধারিত স্থানেই পোস্টার লাগাতো।
একটি দোকানের বিশেষ ছাড়ের বিজ্ঞাপনী পোস্টার রাস্তায় পাশে যত্রতত্র ভাবে লাগাচ্ছিলেন সাইদুর রহমান নামের আরেক ব্যক্তি। একই বিষয় তাকে জানানো হলে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন যদি এমন পোস্টার লাগানোর জন্য নির্ধারিত স্থান তৈরি করে তাহলে সেগুলোর সংখ্যা বাড়াতে হবে। বাড্ডার একজন মানুষ তো আর গুলশানে গিয়ে পোস্টার লাগিয়ে আসবে না। তাই বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগানোর স্থান বানাতে হবে পাশাপাশি এ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণাও চালাতে হবে তা না হলে সাধারণ মানুষ তো জানবেই না 'পোস্টার লাগানোর জন্য নির্ধারিত স্থান আছে'।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উত্তর সিটির বিভিন্ন এলাকায় ৫২টি ব্যস্ততম স্থানে পোস্টার লাগানোর জন্য বিশেষ বোর্ড স্থাপন করা হয়েছিল। যেখানে মানুষ তাদের প্রতিষ্ঠানের প্রচারণামূলক বিজ্ঞাপন কোনো টাকা পয়সা বা চার্জ ছাড়াই ৭ দিনের জন্য লাগাতে পারবেন। নির্দিষ্ট স্থানে মানুষ যে বিজ্ঞাপন লাগাচ্ছেন না এই তথ্য পুরোটাই সঠিক নয়। খামারবাড়িসহ বেশ কয়টি স্থানে নির্দিষ্ট জায়গাতে বিজ্ঞাপন লাগাতে মানুষ বেশ সাড়া দিচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আমাদের আরও প্রচারণা চালিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হবে। সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে এ শহরের সৌন্দর্য, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ব্যাহত হবে। পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী আমাদেরও বিজ্ঞাপন লাগানোর জন্য পর্যাপ্ত জায়গা তৈরি করতে হবে।
এএস/এসএইচএস/জেআইএম
Advertisement