হাসপাতালে রোগী গিয়ে ডাক্তার, নার্স না পেলে সরকার দায়ীদের কোনো ছাড় দেবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা পর্যায়ে আবাসনব্যবস্থা ও গাড়ি বরাদ্দসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি রোগীর সেবা পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে তিনস্তরের মনিটরিং নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মচারীদের উপস্থিতি, যন্ত্রপাতির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং বিভাগীয় পর্যায়ে মনিটরিং সেল গঠন করা হচ্ছে। মনিটরিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সেলগুলো থেকে হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন কঠোর নজরদারি করা হবে। রাজধানী এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী সম্প্রতি এসব কথা বলেন। এগুলো খুবই আশার কথা। জনসাধারণের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি।
Advertisement
দেশে চিকিৎসা ব্যবস্থায় নানা পরিবর্তন এসেছে। এরফলে চিকিৎসাসেবা অনেকটা সহজলভ্য হচ্ছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে চিকিৎসা ব্যয় বেড়েই চলেছে। আর এ ব্যয় মেটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে লোকজনকে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।
এ সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে দেশে প্রতি বছর শতকরা ৫ ভাগেরও বেশি মানুষ সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়ছেন। দেশের বিদ্যমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় এখন চিকিৎসা ব্যয়ে ৬৭ শতাংশ খরচ মানুষকে নিজের পকেট থেকে খরচ করতে হয়। শতকরা ৫৫ ভাগ মানুষ এখনও মানসম্মত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি মানুষের অতিপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সুবিধা গ্রহণের সুযোগ নেই। পৃথিবীর ৮০ কোটি মানুষ তাদের পরিবারের মোট ব্যয়ের অন্তত ১০ শতাংশ চিকিৎসা সেবা গ্রহণের খরচ নিজেদের পকেট থেকে বহন করে এবং বছরে প্রায় ১০ কোটি মানুষ চিকিৎসা সেবার ব্যয় বহন করতে গিয়ে অতিদরিদ্র হয়ে পড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
চিকিৎসা ব্যয় কমানোটা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এমনিতেই দিন দিন চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। মুনাফালোভী এক শ্রেণির হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার আর কিছু অনৈতিক মানসিকতার চিকিত্সক ও ওষুধ কোম্পানির কারণে চিকিৎসা ব্যয় বাড়ছে। স্বাস্থ্য খাতে মানুষ প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি খরচ করে ওষুধের পেছনে। এ কারণে ওষুধের দামের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করতে হবে।
Advertisement
এছাড়া বেসরকারি খাতে যন্ত্রপাতি, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বেসরকারি বিশেষায়িত সেবার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থার উন্নয়নও জরুরি। জনসাধারণের মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকার এগিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা করি।
এইচআর/পিআর