প্রতিবাদের ভাষা বদলেছে বারবার। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠেছে নানাভাবে। এবার এতে যুক্ত হলো নারীর অন্তর্বাস। তারই ছবি পোস্ট করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আছড়ে পড়েছে #ThisIsNotConsent-র পক্ষে প্রতিবাদ।
Advertisement
#মিটু আন্দোলনের পর নতুন করে শুরু হওয়া এই প্রতিবাদে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। নারীদের ওপর যৌন-নির্যাতনের প্রতিবাদে এ আন্দোলন শুরু হয়েছে।
কিন্তু, কীভাবে শুরু হলো এই আন্দোলন? কার পাশে দাঁড়াতে গিয়ে লড়াইয়ের অস্ত্র হিসেবে অন্তর্বাসকেই বেছে নিলেন নারীরা? এ জন্য নজর রাখতে হবে গত কয়েক দিনে আয়ারল্যান্ডে চলতে থাকা ঘটনাবলীর দিকে।
গত ৬ নভেম্বর ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ২৭ বছর বয়সী এক যুবককে নিরপরাধ বলে মুক্তি দেয় আয়ারল্যান্ডের এক আদালত। তার বিরুদ্ধে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। শুনানি চলাকালীন, অভিযুক্তের আইনজীবী ওই কিশোরীর অন্তর্বাস বিচারকদের দেখিয়ে অদ্ভূত এক যুক্তি তুলে ধরেন।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘এই অন্তর্বাস পরে আমার মক্কেলকে প্রলুব্ধ করেছিলেন অভিযোগকারী কিশোরী। এটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, আকৃষ্ট করার যথেষ্ট সম্ভাবনা এই অন্তর্বাসের আছে। এই ধরনের অন্তর্বাস কেউ পরলে বাকিদের কাছে এই বার্তাই পৌঁছায় যে, তার মিলনের ইচ্ছা রয়েছে। আপনারা এটা দেখে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ওই কিশোরী এত ছোট অন্তর্বাস কেন পরতেন?’
এই প্রশ্ন শোনার পর আট পুরুষ এবং চার নারী সদস্যের জুরি বোর্ড ধর্ষণের অভিযোগ থেকে রেহাই দেয় ওই যুবককে। এর পরপরই শুরু হয় ‘#দিস ইস নট কনসেন্ট’ আন্দোলন। ছোট অন্তর্বাস পরা মানেই যে মিলনে সম্মতি দেয়া নয়, এই আন্দোলনের মূল কথা এটিই। প্রথমে আয়ারল্যান্ড, তারপর সেই আন্দোলন এখন ছড়িয়ে পড়েছে সারা পৃথিবী।
অবশ্য শুধু সোশ্যাল মিডিয়া নয়, নির্যাতিতা কিশোরীর পাশে দাঁড়িয়েছেন আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিকরাও। আয়ারল্যান্ডের পার্লামেন্টেও পৌঁছেছে এই আন্দোলনের ঝড়। অন্তর্বাস দেখিয়ে পার্লামেন্টে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন আইনসভার সদস্য রুথ কপিঙ্গার।
তার প্রতিবাদ দেখানোর সময়, বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল পার্লামেন্টের টিভি ক্যামেরা। এটা জানার পর কপিঙ্গারের মন্তব্য, ‘আদালতে অভিযুক্তরা অন্তর্বাস দেখিয়ে ছাড় পেয়ে যায়, অথচ পার্লামেন্টে তা দেখানো যায় না।’ এই নিয়ে রাস্তায় নেমেও প্রতিবাদ সংগঠিত করছেন তিনি।
Advertisement
এখন এই প্রতিবাদে শুধু আয়ারল্যান্ড নয়, সামিল হচ্ছেন দুনিয়ার অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়াকেই তারা বেছে নিচ্ছেন প্রতিবাদের মাধ্যম হিসেবে।
এসআইএস/জেআইএম