'বাংলাদেশে লাখ লাখ মানুষ বর্তমানে মোবাইলের মাধ্যমে সেবা পাচ্ছেন। কৃষকদের কৃষি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান মিলছে এই মোবাইলের মাধ্যমে। পাশাপাশি আর্থিক ও চিকিৎসা সেবাও নিতে পারছেন। আর এসবের প্রযুক্তিগত উন্নয়নে দেশের তরুণ সমাজই ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।
Advertisement
রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ‘রিথিংকিং ডেভেলপমেন্ট ইন সাউথ এশিয়া-২০১৮’ শীর্ষক দুই দিনের এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের এই উপদেষ্টা।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ড. মশিউর বলেন, ঢাকা শহরে জনসংখ্যার চাপ কমাতে ছোট ছোট শহর গড়ে তুলতে হবে। এর ফলে যানজট লাঘব হবে। পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো স্থাপনের ক্ষেত্রে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। এতে করে তরুণদের ঢাকামুখীতা হ্রাস পাবে৷
দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষুদ্র উৎপাদনের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থনীতিকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হলে বৃহৎ উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে। কারণ মুক্ত বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। এই বাজারে ভবিষ্যতে টিকে থাকতে হলে বৃহৎ উৎপাদনের বিকল্প নেই।
Advertisement
এদিকে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্না বলেন, ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের চারটি দেশের উন্নয়ন ইতিহাস পড়ানো হতো। আর সেসব দেশগুলো উন্নয়ন মডেল অনুকরণ করতো অন্য দেশগুলো। ঢাকা শহরে ২ কোটি মানুষ বাস করে। অথচ বিশ্বের ১১২টি দেশে এতো জনসংখ্যা নেই। বিপুল জনসংখ্যার এদেশ পরিচালনা করা সহজ নয়। তারপরেও এই কঠিন কাজটি আমরা করছি।
সমাজ বিজ্ঞান রিসার্চ ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইন্সটিটিউটের পরিচালক ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ। সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার এবং 'মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের' নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম।
সম্মেলনে উন্নয়ন বিতর্ক নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দিল্লির সেন্টার ফর ডেভলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক অরূপ কুমার ধর।
সম্মেলনে আমেরিকা, চীন, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও নেপালের ২০ জন গবেষকসহ মোট ১৫০ জন গবেষক অংশ নিয়েছেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ৮০টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিদিন ৬টি করে মোট ১২টি প্যানেলে প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
Advertisement
সম্মেলন শেষে সোমবার উন্নয়ন গবেষকদের নিয়ে দক্ষিণ এশীয় উন্নয়ন ফোরাম গঠন করা হবে। এছাড়া সমাজ বিজ্ঞান রিসার্চ ইন্সটিটিউট থেকে ৩টি গবেষণা প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশের কথাও রয়েছে।
আবদুল্লাহ রাকীব/এমএএস/আরআইপি