রাজধানী ঢাকা এখন পরিণত হয়েছে দুর্ভোগের নগরীতে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে রাজধানীর অলিগলি। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লোকজনকে। এদিকে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের অবস্থাও শোচনীয়। জলমগ্ন সড়কে নরকের দুর্ভোগপোহাচ্ছে নগরবাসী।
Advertisement
গতকাল মঙ্গলবারের বৃষ্টিতে পানির নিচে চলে গেছে ঢাকার দুই অংশের প্রধান প্রধান সড়ক, গলিপথসহ আশপাশের অনেক এলাকা। মাঝারি বৃষ্টিতেই স্থবির হয়ে পড়ছে ঢাকা। ফলে দুর্ভোগ যেন নিয়তির লেখন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সারাবছর ধরে যানজটের নিগড়ে পিষ্ট হয় মানুষজন। শুকনো মৌসুমে ধুলায় মুখে রুমাল দিয়ে চলতে হয়। আর বর্ষায় জলাবদ্ধতায় নৌকা চলার উপযোগী রাস্তাঘাট। তৈরি হয় তীব্র যানজট। পানি জমে যাওয়ায় অনেক স্থান ভ্যান-রিক্সায় পার হতে হয়েছে। একটু জায়গা পার হওয়ার জন্য ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়েছে।
চট্টগ্রামে গতকাল সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনও মুষলধারে। সোমবার রাতের পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে আবারও শুরু হয় ভারী বর্ষণ। এতে ডুবে গেছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চল। পানি-কাদায় একাকার রাস্তাঘাট। বিঘ্নিত হচ্ছে সড়কে যান চলাচল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্কুল-কলেজ-অফিসগামীরা। অনেকেই নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারেননি গন্তব্যে।
Advertisement
মূলত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সঠিকভাবে কাজ না করাতেই এই অবস্থা। এছাড়া নির্মাণ কাজের জন্য চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে দুর্ভোগ আরো বেড়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য এক সংস্থা আরেক সংস্থাকে দায়ী করছে। কারো কাজে কোনো সমন্বয় নেই। কে দায়ী, কে দায়ী নয় তারচেয়ে বড় কথা নগরবাসীকে দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে হবে। এরজন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে সে অনুযায়ী এগুতে হবে। ঢেলে সাজাতে হবে ড্রেনেজ ব্যবস্থাকে। এই ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সাতটি সংস্থা জড়িত। এগুলোর সাথে সমন্বয় থাকতে হবে। প্রয়োজনে এগুলো একটা সংস্থা অর্থাৎ সিটি করপোরেশনের আওতায় আসা উচিত। রাজধানীর খালগুলো উদ্ধার করতে হবে। ঢাকার চারপাশে নদীগুলোরও দখল-দূষণ বন্ধ করতে হবে। নানা কারণেই রাজধানী বাসঅনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এখন জলাবদ্ধতাও যদি বাড়তি দুর্ভোগ তৈরি করে সেটি হবে ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতায়ও সীমাহীন দুর্ভোগ পোহায় নগরবাসী। এভাবে চলতে পারে না। জনদুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এইচআর/পিআর