মতামত

কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা

 

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বসবে ২১টি পশুর হাট। পশুর হাটের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এই সময় নগদ টাকার লেনদেন অনেক বেড়ে যায়। এছাড়া মলমপার্টি, অজ্ঞানপার্টি, জালিয়াতচক্রের অপরাধীরা এই সময় আরো সক্রিয় হয়ে ওঠে। কোরবানির পশুর হাটের ইজারা এবং হাসিল আদায় নিয়েও আধিপত্য বিস্তারের ঘটনা ঘটে। এসব কারণে পশুর হাটের নিরাপত্তা জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি।

Advertisement

পশুর হাটগুলোতে লাখ লাখ মানুষের সমাগম আর কোটি কোটি টাকার লেনদেন হবে। তাই সবকিছু মাথায় রেখে এবার রাজধানীর পশুর হাটে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পরিকল্পনা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হাটের শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এবার সমন্বিতভাবে কাজ করবে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও র‌্যাব।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, হাটে যে কোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে, হাট ও ব্যাপারিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইজারাদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। এ ছাড়াও স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পুলিশের উপ-কমিশনারদের (ডিসি) সঙ্গেও পৃথকভাবে বসার কথা রয়েছে।

ডিএমপির নিরাপত্তা পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রত্যেক হাটে পুলিশের কন্ট্রোল রুম এবং সিসিটিভি ক্যামেরা থাকবে। জাল টাকা শনাক্তে পুলিশ কন্ট্রোল রুমে থাকবে ইলেকট্রিক মেশিন এবং প্রজেক্টর। প্রজেক্টরে জাল টাকা ও অজ্ঞানপার্টি থেকে নিরাপদ থাকতে পুলিশের নির্মিত সচেতনতামূলক প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হবে। হাটের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাদা পোশাক ও ইউনিফর্মে থাকবে পুলিশের ১০০ ফিটের ওয়াচ টাওয়ার। দূরবীন হাতে হাটের সার্বক্ষণিক চিত্র পর্যবেক্ষণ করবেন পুলিশ সদস্যরা। প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে কোনো হকার বসতে দেবে না ডিএমপি।

Advertisement

কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নানা রকম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু এরপরও নানা রকম অপতৎপরতা চলতেইই থাকে। পশুবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে পশুর হাটকে কেন্দ্র করেও চলে নানা অপতৎপরতা। এ সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। গরু ব্যবসায়ীদের তারা টার্গেট করে। এদের অপতৎপরতা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এছাড়া মলম পার্টির লোকজনও সক্রিয় হয় এ সময়। তারা সুযোগ বুঝে চোখে মলম লাগিয়ে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। অতীতে এরক ঘটনার অনেক নজির আছে। সে আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পশুর হাটে পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে হবে। ক্রেতা বিক্রেতারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করে পছন্দের পশু কিনতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় নগদ অর্থের লেনদেনও বেশি হবে। এ জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। পশুর হাটে জাল টাকার বিস্তার রোধেও নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। জল নোট সনাক্তকারী মেশিনও রাখতে হবে পশুর হাটে। বিভিন্নক্ষেত্রে নিরাপত্তা জোরদার করে পশুর হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস

Advertisement