দেশজুড়ে

রংপুর অঞ্চলের সাংবাদিক তৈরির কারিগর বাটুল

সংবাদপত্রকে ঘিরেই যেন তিনি রচনা করেছেন তার জীবনের রেখা চিত্র। যাত্রা সহজ নয়, বিঘ্নের কাঁটায় ভরা সেই পথ, তবুও দৃঢ় মনোবল আর প্রত্যয়ের নিষ্ঠ সাধনায় প্রায় পাঁচ দশক ধরে আলো ছড়াচ্ছেন তিনি। রংপুরের সংবাদপত্র, সাংবাদিকতার প্রসঙ্গ এলেই তার নামটি উচ্চারিত হয়। তিনি সাংবাদিক, সংবাদপত্রের প্রতিষ্ঠাতা। বলা যায় সফল প্রতিষ্ঠাতা। আর এ প্রয়াসের সূচনা হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ‘সাপ্তাহিক রণাঙ্গন’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশনার মধ্য দিয়ে।

Advertisement

‘সাপ্তাহিক রণাঙ্গন’ দেশ মাতৃকার সেবায় ও স্বাধীনতাকামী মানুষের সাহস যোগানোর যে অনুপ্রেরণা ও দুঃসাহস দেখিয়েছে তা স্বাধীনতার ইতিহাসে ও সেই সময়ের মুক্তিকামী জনতার হৃদয়ে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। একাত্তর পরবর্তী সময়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রণাঙ্গন বন্ধ করে দেয়া হলে ‘সাপ্তাহিক মহাকাল’ নামধারণ করে নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে।

পরবর্তী সময়ে পাঠকের চাহিদা ও দৈনিক সংবাদপত্র প্রকাশের জন্য দায়বদ্ধতা অনুভব করার ফলশ্রুতিতে ১৯৮১ সালের ২৭ মে থেকে ‘দৈনিক দাবানল’ নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে নিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। অনেক চড়াই-উৎড়াই পেরিয়ে বুট, বুলেটের কষাঘাতে ঝাজড়ে পড়া একাত্তরের রক্ত ললাট প্রান্তর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক রণাঙ্গনই আজকের দৈনিক দাবানল। আর এ অগ্রযাত্রার গৌরবোজ্জ্বল ৪৭ বছরের সফল প্রকাশক ও সম্পাদক হিসেবে যে মানুষটি নিরলস মেধা, পরিশ্রম ও সাহসিকতায় নিজেকে আবিষ্কার করেছেন অদ্বিতীয় হিসেবে, তিনি মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল।

তার হাত ধরে দাবানল থেকে উত্তর জনপদে সৃষ্টি হয়েছে অনেক সাংবাদিক, কবি, লেখক, সাংস্কৃতিক অঙ্গণের তারকা। যাদের বিচরণের নেপথ্যের ভূমিকায় রয়েছে দাবানল।

Advertisement

মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত ‘সাপ্তাহিক রণাঙ্গন’। বাংলাদেশের মুক্তাঞ্চল লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থেকে প্রকাশ হয়েছিল পত্রিকাটি। মুস্তফা করিম ছদ্মনামে পত্রিকাটির প্রকাশক ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন আজকের দৈনিক দাবানলের সম্পাদক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল।

১৯৪৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের বুজরুক ঝালাই গ্রামে মা মাজেদা বেগমের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন বাটুল। বাবা এলএমএফ (চিকিৎসক) মৃত ডা. মোজাম্মেল হক খন্দকার।

সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় বর্ষীয়ান এ সাংবাদিক তুলে ধরেন তার বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতি বিজরিত নানা দিক।

বাটুল জানান, বাড়ির পাশের কোনাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মা-বাবার সঙ্গে রংপুরে বসবাস শুরু করেন তিনি। ভর্তি হন পার্শ্ববর্তী ঐতিহ্যবাহী কৈলাশরঞ্জণ হাইস্কুলে। ১৯৬০ সালে কৈলাশরঞ্জণ স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন কারমাইকেল কলেজে।

Advertisement

তখন তার বাড়ন্ত যৌবন। যৌবনের শুরুতেই জড়িয়ে পড়েন নেতৃত্বে। জড়িয়ে পড়েন পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনে। আর ক্যাম্পাসের বাইরে ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন রংপুরের সেনপাড়ায় (বর্তমান সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়) খেলাঘর আসর। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনসহ নানা কারণে পালিয়ে থাকতে হয়েছে তাকে। ফলে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করতে তার সময় লাগে ৪ বছর।

১৯৬৪ সালে তখনকার দিনের ছাত্র ইউনিয়নের নেত্রী মতিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে ৩ জন কেন্দ্রীয় নেতা আসেন রংপুরে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে। তখন তাদের আটক করে জেলে পাঠানো হয়। সেই সময় রংপুর জেলা ছাত্রশক্তির সাধারণ সম্পাদক তিনি। এই আটকের প্রতিবাদে পুরো জেলায় হরতাল ডাক দেন বাটুল। এ কারণে তাকেও গ্রেফতার করা হয়। তিনি জেলবন্দি থাকেন ৬ মাস। পরে মুক্ত হন। ওই বছরেই কারমাইকেল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন তিনি। কিন্তু কারমাইকেল কলেজ সরকারি হওয়ার পর আইয়ুব খান বিরোধী আন্দোলনের কারণে তাকে কারমাইকেল কলেজ দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে তিনি ভর্তি হন রংপুর সরকারি কলেজে। ১৯৬৫/৬৬ সালে রংপুর কলেজের জিএস নির্বাচিত হন তিনি। ছাত্র অবস্থাতেই জড়িয়ে পড়েন শ্রমিক আন্দোলনে। তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা করেন রংপুর-দিনাজপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। স্নাতক পাসের পর উচ্চ শিক্ষায় ব্রতী না হয়ে তিনি যোগদেন শ্রমিক সংগঠন সম্প্রসারণে। যুগপদ শ্রমিক আন্দোলনের কারণে ১৯৭০ সালে মার্শা ল’র সময় তার ৬ মাসের জেল হয়।

তিনি জানান, এরই মাঝে ঘনিয়ে আসে ১৯৭১ সাল। ওই বছরের ১২ মার্চ মজদুর ফেডারেশনের ব্যানারে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে শ্রমিক জনসভায় আনুষ্ঠনিকভাবে পাকিস্তানি পতাকা নামিয়ে সেখানে মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করার দীপ্ত শপথ গ্রহণ করেন বাটুল। সারাদেশে স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনে মুখর হয়ে উঠে মানুষ। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী অবস্থা বেগতিক দেখে ঢাকায় খাদ্যশস্য মজুতের পরিকল্পনা নিয়ে উত্তরাঞ্চল থেকে খাদ্যশস্য নিয়ে ঢাকায় মজুত করতে থাকে। এই অবৈধ কর্মকাণ্ড প্রতিহত করার ডাক দেন তৎকালীন রংপুর-দিনজাপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল।

২৩ মার্চ স্থানীয় তেঁতুলতলায় (বর্তমানে শাপলা চত্বর) এক শ্রমিক সভায় শ্রমিকদের খাদ্যশস্য পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বাটুল। ফলে পরদিন থেকে খাদ্যশস্য পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এতে শাসকগোষ্ঠী বাটুলের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতার কথা চিন্তা করে ২৬ মার্চ রাতে গঙ্গাচড়ার মহিপুর হয়ে তিস্তা পাড়ি দিয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে যান বাটুল। পরে সেখান থেকে ২৭ মার্চ ভারতের কুচবিহারের দিনহাটার সিতাই বন্দরে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ নামের একটি রাজনীতিক দলের শরণাপন্ন হয়ে তাদের আশ্রয় গ্রহণ করেন। ওই এলাকার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা কমল গুহ বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক নেতা অলি আহাদের শিক্ষা জীবনের সহপাঠি ছিলেন। কমল গুহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাটুল সহযোগিতা কামনা করেন।

বাটুলের ভাষায় ‘কমল গুহ আমাকে জানালেন, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তাই মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রহ করতে হবে। তার কথা মতো আমি সিতাই বন্দরে ফিরে এসে উৎসাহী যুবক টিপু, জোসনা, পিন্টুসহ ১০ থেকে ১২ জন যুবক-যুবতীকে কমল গুহের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাই। তিনি বেসরকারিভাবে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ব্যাপকভাবে লোকজন ভারতে যেতে থাকে। এবং তাদের মধ্য থেকে আরও কিছু লোককে সংগ্রহ করে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠাই। এরই মধ্যে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকার গঠনের পর তারা ভারতে চলে যায়। কিছুদিনের মধ্যেই তারা মুক্তিযুদ্ধের সকল দায়দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ফলে আমরা বেকার হয়ে পড়ি। এ সময় কমল গুহ মুক্তিযুদ্ধের খবরাখবর ব্যাপকভাবে প্রচারের জন্য আমাকে পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ ও সাহসে মুক্তিযুদ্ধের জন্য ‘মুস্তফা করিম’ ছদ্মনামে সাপ্তাহিক ‘রণাঙ্গন’ পত্রিকার প্রকাশনা শুরু করি। সাংবাদিকতা জীবনের স্মৃতিবিজরিত ঘটনার কথা জানতে চাইলে বাটুল বলেন, আমরা ১০-১২ জন উদ্যোগী ভারত সরকারের রিলিফ হিসেবে যে সাহায্য পেতাম তার অর্ধেক বিক্রি করা অর্থ দিয়ে পত্রিকাটির প্রকাশনা অব্যাহত রাখি। এভাবে কয়েক মাস চলার পর ৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে কলকাতা গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের সঙ্গে দেখা করে তার ঐতিহাসিক এক দুলর্ভ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী সেই সাক্ষাৎকার গ্রহণের মুহূর্তটি আজো ভুলতে পারেননি তিনি। দেশ স্বাধীনের পর শুরু হয় রণাঙ্গনের সাহসী পথচলা। কিন্তু সেই সময়কার শাসকগোষ্ঠীর তোপের মুখে পড়ে রণাঙ্গন। সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা অফিসে হামলা চালিয়ে সব তছনছ করে দেয়। রণাঙ্গণ বাজেয়াপ্ত করে সরকার। পরবর্তীতে বিভাগীয় কমিশনার অফিসে আপিল করে ছাপাখানাটি ফেরত পেলেও রণাঙ্গণের ডিক্লারেশন ফেরত পাননি তিনি। এরপর প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাপ্তাহিক মহাকাল’। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত প্রকাশনা অব্যাহত থাকে ‘সাপ্তাহিক মহাকাল’ এর। পাশাপাশি ১৯৮১ সালের ২৭ মে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘দৈনিক দাবানল’। বাটুল প্রতিষ্ঠিত এই তিনটি পত্রিকায় কাজ করেছেন দেশ বিদেশের প্রথিতযশা অনেক সাংবাদিক। চারণ সাংবাদিক মোনাজাত উদ্দিন, আমেরিকা থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সাংবাদিক আব্দুল মালেক, রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক বায়ান্নর আলোর নির্বাহী সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোনাব্বর হোসেন মনা, দৈনিক যুগের আলোর বার্তা সম্পাদক আবু তালেব, বিটিভির রংপুর প্রতিনিধি আলী আশরাফ, এটিএন বাংলার মাহবুবুল ইসলাম ও কেরামত উল্লাহ বিপ্লবসহ অসংখ্য গুণী সাংবাদিক দৈনিক দাবানলের অমর সৃষ্টি। এছাড়াও রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিদম্যান অধিকাংশ পত্রিকাগুলোও তারই হাতে গড়া সাংবদিকদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত হয়ে আসছে। ‘দৈনিক দাবানল’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭৯ সালে মিঠাপুকুর থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

শুধু সাংবাদিকতা, সম্পাদনা আর রাজনীতির মধ্যেই থেমে ছিলেন না বাটুল। মিঠাপুকুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অন্যতম উদ্যোক্তা হিসেবে সেটি প্রতিষ্ঠা করেন। তার হাতে গড়া সংগঠন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন এখন উত্তরাঞ্চলে সব থেকে প্রতিষ্ঠিত শক্তিশালী সংগঠন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ঐতিহ্যবাহী সংগঠন রংপুর খেলাঘর, শিখা সংসদসহ অসংখ্য সংগঠন। সাংবাদিকতায় অনবদ্য অবদান রাখার জন্য রংপুর পৌরসভার সিটিজেন অ্যাওয়ার্ড, রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের মোনাজাত উদ্দিন সাংবাদিকতা স্মৃতিপদকসহ অসংখ্য পদক পেয়েছেন তিনি।

তার বড় ছেলে খন্দকার মোস্তফা মোর্শেদ ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করার পর ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে খন্দকার মোস্তফা সরওয়ার অনু ভারতের মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ করে ব্যবসার পাশাপাশি পত্রিকা দেখাশোনা করছেন। একমাত্র কন্যা সোনিয়া মোস্তফা ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন।

বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া এই গুণী সাংবাদিক ও সংগঠক এখনও প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা করে সময় কাটান তার প্রতিষ্ঠিত দাবানলে। জীবন সায়াহ্নে এসে আর চাওয়া-পাওয়ার কিছুই নেই তার। তবে আক্ষেপ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোঠায় অনেকের চাকরি হলেও নিজ সন্তানদের ক্ষেত্রে তা না হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

বাটুল বলেন, ৩৫তম বিসিএস-এ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও শেষ পর্যন্ত অর্থের কাছে হেরে গিয়ে চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে একমাত্র মেয়ে সোনিয়া মোস্তফা।বেঁচে থাকতেই বাবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি করেন ছোট ছেলে খন্দকার মোস্তফা সরওয়ার অনু। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধসহ এ অঞ্চলের উন্নয়নে রণাঙ্গন, মহাকাল ও দাবানলের ভূমিকা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। আর এসবের যিনি প্রধান কারিগর মৃত্যুর আগেই তাকে মূল্যায়ন করা হোক, এটাই দাবি।

দৈনিক বায়ান্নর আলোর নির্বাহী সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোনাব্বর হোসেন মনা বলেন, সাংবাদিকতার জীবন্ত কিংবদন্তি খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল। যার প্রতিষ্ঠান দৈনিক দাবানলে কাজ করার মধ্য দিয়ে আমার সাংবাদিকতা জীবনের শুরু। আমার মতো অনেকেই তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। যারা এখন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকতায় প্রতিষ্ঠিত।

রংপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি সদরুল আলম দুলু বলেন, এ অঞ্চলের সাংবাদিক তৈরির অনবদ্য কারিগর খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুল। তার হাত ধরে অসংখ্য সাংবাদিক তৈরি হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, সংগঠক খন্দকার গোলাম মোস্তফা বাটুলকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো মূল্যায়ন না করাটা কষ্টের।

এমএএস/আরআইপি