ঝিনাইদহে গড়াই নদীর চর থেকে দেদারছে বালু তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। প্রতিদিন অন্তত ১০০ ট্রাক বালু তোলা হচ্ছে কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই। ফলে নদীতে যেমন ভাঙন দেখা দিয়েছে তেমনি আশপাশের ফসলী জমিও ভেঙে যাচ্ছে। এ ছাড়া একের পর এক ট্রাক চলাচলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার রাস্তা-ঘাট। এপার-ওপারের ৩ গ্রামের কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষের জীবন আজ হুমকির মুখে।
Advertisement
স্থানীয় ভূমি অফিস সূত্র জানায়, শৈলকুপার কৃষ্ণনগর এলাকায় গড়াই নদীতে জেগে ওঠা চর কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার চান্দর মৌজার অন্তর্ভুক্ত। এই এলাকা ছাড়িয়ে এখন বালু কাটা হচ্ছে শৈলকুপার কৃষ্ণনগর মৌজা এলাকা থেকে। প্রতিদিন অন্তত দিনে-রাতে মিলিয়ে দুটি-ভ্যাকু মেশিন ও শ্রমিকদের সাহায্যে ট্রাক ও ট্রলি ভর্তি করে বালু যাচ্ছে ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জেলায়। টেন্ডারের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের নিয়ম থাকলেও এ সবের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে প্রভ।
কৃষ্ণনগর গ্রামের রমজান আলী জানান, ইচ্ছেমতো বালি তোলার কারণে নদীর চরে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙতে শুরু করেছে নদীর চর, ভেঙে যাচ্ছে চরের ফসলী জমি। আর একের পর এক ট্রাক চলাচলে নষ্ট হচ্ছে এলাকার রাস্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুত কৃত্তিনগর গ্রামের এলাকাবাসীরা জানান, শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নে কৃষ্ণনগর এলাকায় গড়াই নদীর চর থেকে দেদারছে তোলা হচ্ছে বালু। শুধু তাই নয় বালু তোলার নামে কেটে নেয়া হচ্ছে নদী চরের ফসলী জমির মাটি। আর এভাবে ওই চরে প্রায় ৭ মাস ধরে চলছে বালু উত্তোলন করে বিক্রির কাজ। এতে জড়িত রয়েছে শৈলকুপার সারুটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মামুন, সাবেক ইউপি সদস্য আনছার আলী, বাবুল আক্তার ও কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। শুধু এ স্থানে নয়, কৃত্তিনগর, গোসাইডাঙ্গা এলাকা থেকেও তোলা হয় বালু।
Advertisement
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জি এম এন্টার প্রাইজের সুপারভাইজর আওয়াল হোসেনের জানান, এ বিষয়ে স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এমনভাবে চলতে থাকলে সামনের বর্ষায় নদী ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। তবে ইউপি চেয়ারম্যানকে না পাওয়া গেলেও অভিযুক্ত আনসার আলী স্বীকার করে বলেন, বিনা টেন্ডারে বালু তোলা তো অবৈধ হচ্ছেই।
উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উসমান গনি জানান, যেহেতু ঝিনাইদহের শৈলকুপা অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সেহেতু অবশ্যই খোকসা ও শৈলকুপা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়ে অচিরেই বালু উত্তোলন বন্ধে উদ্যোগ নেয়া হবে।
আহমেদ নাসিম আনসারী/আরএ/জেআইএম
Advertisement