দেশজুড়ে

এখানে আর ব্রিজ হবে?

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও লাংগুলিয়া নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নদীটির ওপর নির্মিত একটি কাঠের সাঁকো প্রায় অর্ধ লাখ মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হলেও টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাউলজানী ও ফুলকি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী লাংগুলিয়া নদীর খাটরা এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। কাঠের সাঁকোটি গ্রামবাসীর একমাত্র ভরসা। এই সাঁকো দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে এলাকাবাসী। সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ অসংখ্য জনপ্রতিনিধি থাকলেও কাউলজানী ও ফুলকি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলাখ মানুষের এ দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দেখার যেন কেউ নেই।

Advertisement

জানা যায়, উপজেলার খাটরাসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে পৌঁছানোর একমাত্র সড়ক এটি। এ সত্ত্বেও কাউলজানী বোর্ড বাজার এলাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লুৎফা শান্তা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কাউলজানী নওশেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের হাজারও শিক্ষার্থীসহ অর্ধ লাখ মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের এ সাঁকো দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও কয়েকটি ব্যাংক রয়েছে এ কাউলজানী বোর্ড বাজারে। এছাড়াও পাশ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার কয়েক হাজার মানুষও যাতায়াতে ব্যবহার করে এ সাঁকোটি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায় ৬ বছর আগে নদীটির ওপর স্থানীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় গ্রামবাসীরা কাঠের এ সাঁকোটি স্থাপন করেন। এরপর আর সংস্কার না হওয়ায় কাঠগুলো পচে গিয়ে বর্তমানে সাঁকোটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিগত দিনে জনপ্রতিনিধিরা ব্রিজ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও কার্যত সাধারণ মানুষের ভাগ্যে দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। সাঁকোটির এ অবস্থায় পায়ে হেঁটে কোনো রকমে পারাপার সম্ভব হলেও যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে গ্রামগুলোর কৃষকের উৎপাদিত খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্যসহ বিভিন্ন কাঁচামাল বাজারজাতকরণে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে গ্রামবাসীদের প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে যানবাহনে চলাচল করতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগি আবুল খায়ের, আব্দুল্লাহ ও শুকুর মামুদসহ গ্রামবাসী জানান, কয়েকটি এলাকার মানুষের উপজেলা সদর ও কাউলজানী বোর্ড বাজারে অবস্থিত বিভিন্ন ব্যাংক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি হওয়ার কারণে এ কাঠের সাঁকোটি স্থাপন করা হয়েছিল। তবে এটিও এখন ঝুঁকিপূর্ণ। দীর্ঘদিন যাবৎ এ গ্রামগুলোর মানুষ একটি ব্রিজ নির্মাণের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি দাবি করে আসছিল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে এর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।

Advertisement

কাউলজানী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, লাংগুলিয়া নদীর খাটরা এলাকায় ব্রিজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। এ দাবির প্রেক্ষিতে প্রয়াত সংসদ সদস্য শওকত মোমেন শাহজাহানের সহযোগিতায় এই কাঠের সাঁকো স্থাপন করা হয়। তা এখন প্রায়ই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ ভোগান্তি নিরসনে ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

লাংগুলিয়া নদীর ওপর ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন।

এ বিষয়ে বাসাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল ইসলাম বলেন, ব্রিজটি নির্মাণের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পরিমাপ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।

আরিফ উর রহমান টগর/আরএ/জেআইএম

Advertisement