চলেছে পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ। ‘পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার; নিঃস্বার্থ সেবাই অঙ্গীকার’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে গত শনিবার ‘পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ-২০১৮’ শুরু হয়েছে। জনসাধারণ যেন সহজেই পাসপোর্ট পান সেটি নিশ্চিত করতে পারলেই পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদযাপন সার্থক হবে।
Advertisement
‘পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ-২০১৮’ উদযাপন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, সেবা প্রত্যাশীরা যাতে নির্বিঘ্নে ও দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আর এটা করতে পারলে এবারের পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার : নিঃস্বার্থ সেবাই অঙ্গীকার’ যথার্থ হবে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, তার সরকার ২০১০ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এবং মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) প্রবর্তন করে। ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও ভিসার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাংলাদেশি জনগণের বিদেশ ভ্রমণ সহজতর হয়েছে। তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রায় ২ কোটি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ও ৬ লাখ মেশিন রিডেবল ভিসা প্রদান করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার অচিরেই ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা কাঙ্খিত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন।
পাসপোর্ট নাগরিকদের জন্য অতিপ্রয়োজনীয়। শুধু ভ্রমণ নয়, বিদেশে কর্মসংস্থান, উচ্চশিক্ষা, উন্নত চিকিৎসা- অনেক কারণেই মানুষকে এখন দেশের বাইরে যেতে হয়। পবিত্র হজ পালন করতেও প্রতিবছর লক্ষাধিক মানুষকে বাইরে যেতে হয়। তাই দিন দিনই পাসপোর্টের চাহিদা বাড়ছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী প্রতিদিন নতুন পাসপোর্ট কিংবা পাসপোর্ট নবায়নের জন্য ২০ হাজারের বেশি আবেদন জমা হয়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে পাসপোর্ট পেতে নানা রকম বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। সাধারণ পাসপোর্টের জন্য ফি হচ্ছে তিন হাজার ৪৫০ টাকা, অথচ দালালদের দিতে হয় পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। জরুরি পাসপোর্টের জন্য নির্ধারিত ফি ছয় হাজার ৯০০ টাকার স্থলে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া পুলিশ প্রতিবেদনের জন্যও দিতে হয় এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। এ নিয়ে গড়ে উঠেছে দালালচক্র। ফলে লোকজন কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
Advertisement
অনলাইন আবেদনসহ নানাভাবে পাসপোর্ট প্রাপ্তির সেবা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বরঞ্চ পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি এখন অকেটা ওপেন সিক্রেট। এ অবস্থায় পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। লোকজন যাতে সহজে পাসপোর্ট পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে। আমরা পাসপোর্ট নিয়ে কোনো ধরনের হয়রানি দেখতে চাইনা।
এইচআর/জেআইএম