জাতীয়

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দরকার সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা

সড়ক দুর্ঘটনা ফের বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজনীতবিদ ও আইনজীবীসহ বিশিষ্ট নাগরিকেরা। তারা বলেছেন, গণপরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও শ্রমিক অসন্তোষ দূর করা না গেলে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো যাবে না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দরকার নৌপথ, সড়কপথ ও রেলপথের মধ্যে সমন্বয় করে একটি সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এজন্য সুপরিকল্পিত প্রকল্প প্রণয়ন এবং তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

Advertisement

শুক্রবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের কমরেড মণি সিংহ সড়কের মুক্তি ভবনে অনুষ্ঠিত ‘সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও প্রতিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তাঁরা এসব কথা বলেন। বেসরকারি সংগঠন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি এই সভার আয়োজন করে। জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে।

আলোচনা সভায় বক্তারা আরও বলেন, সাধারণ মালিকদের হয়রানি বন্ধ ও শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায্য মজুরি-ভাতা দেয়া না হলে এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা মোটেও সম্ভব নয়। এজন্য ঢাকাসহ সারাদেশের বাস-ট্রাক টার্মিনালগুলোকে চাঁদাবাজিমুক্ত এবং চালক ও সহকারীসহ সব ধরনের পরিবহনকর্মীদের নিয়োগপত্র দিতে হবে।

আলোচনা সভায় আশীষ কুমার দে তাঁর প্রবন্ধে সড়ক দুর্ঘটনার গত তিন বছরের মাসভিত্তিক পরিসংখ্যান ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে সারাদেশে ৩,৪৭২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৬ নারী ও ৫৩৯ শিশুসহ মোট ৪,২৮৪ জন নিহত এবং ৯,১১২ জন আহত হয়েছেন। ২০১৬ সালে ২,৯৯৮টি দুর্ঘটনায় ৪৭০ নারী ও ৪৫৩ শিশুসহ ৩,৪১২ জন নিহত এবং ৮,৫৭২ জন আহত হয়েছেন। ২০১৫ সালে ৪,৫৯২টি দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬,৮২৩ ও ১৪,০২৬। নিহতের মধ্যে ৭৮১ নারী ও ৭৬২ শিশু রয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনায় বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ ৩৪ হাজার কোটি টাকা যা জিডিপির দুই শতাংশ বলে জানানো হয়। প্রবন্ধে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ১৪টি সুপারিশ উত্থাপন করা হয়।

Advertisement

দৈনিক জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক ও জাতীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রাজন ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুর রহমান সেলিম, পরিবেশবিদ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভুইয়া, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী তাসলিমা পারভীন কল্পনা, সংস্কৃতিকর্মী বিপুল মোল্লা, পরিবেশকর্মী ইফমা হুসেইন ও আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হীরক পাশা চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল।

এফএইচএস/ওআর/এমআরএম