নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সহজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
Advertisement
রোববার সচিবালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জুয়াও তাবাজারা ডি অলিভিরা জুনিয়রের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে চীন ও রাশিয়া বাংলাদেশের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এই দুই দেশকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল দিতে চেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখনও সেই অবস্থানে রয়েছে কি না জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সারা পৃথিবীতেই আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে প্রত্যেকটি দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে। ভারত প্রথম যে অবস্থায় ছিল এখন তা নেই। তারা পক্ষেও ভোট দেয়নি বিপক্ষেও দেয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসে বলেছেন তিনি উদ্যোগ নিতে পারেন যাতে করে রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে পারেন। চীনেরও একটা স্বার্থ আছে মিয়ানমারের প্রতি। তারা সেখানে ইকনোমিক জোন করবে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করবে। তাদের অনেক ব্যাপার আছে। ভারত সেখানে পোর্ট করেছে। রাশিয়া অস্ত্র বিক্রি করে।’
Advertisement
বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা ইস্যুকে আন্তর্জাতিক ইস্যু করতে পেরেছে দাবি করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারও এখন নমনীয় হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা আশা করি রোহিঙ্গা পাঠাতে পারব। তবে এটা (রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো) সহজ কাজ নয়। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও বলেছেন এটা সহজ কাজ নয়। কঠিন কাজ, কিন্তু আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত আছে ও অব্যাহত থাকবে।’
‘আগামী ৩০ তারিখে (নভেম্বর) কানাডিয়ান মিনিস্টার আসছেন, কূটনৈতিক সফলতা আমাদের আছে। যারা বিএনপির মতো বলে, তারা বিরোধিতার জন্য বিরোধিতা করে।’
জাতিগত নিপীড়নে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের কয়েক লাখ রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বসবাস করছেন। মিয়ানমারের সীমান্তে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর চেক পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ আগস্ট থেকে নতুন করে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর অভিযান চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। তখন থেকে রোহিঙ্গারা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৫ আগস্টের পর থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমার নাগরিকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ লাখ। অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় এ সংখ্যা বাড়ছে।
Advertisement
আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তোফায়েল আরও বলেন, ‘গতকাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল নাগরিক সভা হয়েছে। এটা দলীয় সভা নয়, এটা সকলের জন্য। ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি আনন্দের ব্যাপার, তাও কষ্ট করে বলেছে। এইটুকু বলতে কষ্ট হয়েছে, যে না বলে পারা যায় না। কারণ এরাই তো তারা যারা এই ৭ মার্চের ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল (নাগরিক সমাবেশে) হাজার হাজার লাখ লাখ লোক এসেছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এভাবে স্কুল কলেজ, শিক্ষক.... অমুক-তমুক করে। এমন কোনো জায়গা নেই যেটাকে বিএনপি ছোট করার চেষ্টা করে না, জাতিকে ছোট করে না।’
আরএমএম/এনএফ/আইআই