নড়িয়া উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক পাঁচ বছর যাবৎ কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে হঠাৎ করে ফের কাজে যোগদান করেছেন। অনুপস্থিতির জন্য একাধিকবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসির সরদার গত ১ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর সর অভিযোগ দায়ের করেছেন।
Advertisement
তবে এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলছেন, কোনো শিক্ষক চার বছর ৩৬৪ দিন অনুপস্থিত থাকলে তিনি পুনরায় চাকরিতে যোগদান করতে পারবে। এর বেশি হলে আর চাকরি থাকবে না। তবে এ সংক্রান্ত কোনো লিখিত অভিযোগপত্র হাতে পাইনি। অভিযোগ পেলে সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৬৯নং নলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে ২০১০ সালে যোগদান করেন মো. দেলোয়ার হোসেন । যোগদানের তিন বছর পর ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল শারীরিক অসুস্থতা দেখিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে তিন দিনের ছুটি নেন। ছুটি নিয়েই ইতালি পাড়ি জমান তিনি। এরপর আর বিদ্যালয়ে আসেননি। এমনকি তিনি প্রধান শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটির আবেদনও করেননি। কিন্তু চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর নড়িয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে উক্ত বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ফের যোগদান করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসির সরদার অভিযোগ করে বলেন, ওই শিক্ষক ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল থেকে ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। আমি দুই দিন আগে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
সভাপতি জানান, পাঁচ বছর ছয়মাস পাঁচদিন ইতালী ছিলেন সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসারের যোগসাজসে ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে উক্ত বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে পুনরায় যোগদান করেন। যা বিদ্যালয়ের আইনের পরিপন্থী কাজ। তাই এই শিক্ষককে বরখাস্ত করার জন্য আমার এই অভিযোগ।
Advertisement
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের বক্তব্য জানতে বুধবার বিদ্যালয়ে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাকে। তিনি তখনও ছুটিতে ছিলেন। পরে মুঠোফোনে তিনি ব্যাস্ততার কথা জানিয়ে লাইন কেটে দেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেবুন্নেছা বলেন, ওই শিক্ষক আমার কাছ থেকে ২০১২ সালের ২১ এপ্রিল তিন দিনের ছুটি নেন। তারপরে আর ছুটি বা দরখাস্ত দেননি। কিভাবে এতদিন তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেন তা আমার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, আমি এ উপজেলায় নতুন আসেছি। সহকারী শিক্ষকের বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।
মো. ছগির হোসেন/এফএ/এমএস
Advertisement