কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের হামলায় ৪ বাংলাদেশি গুরুতর আহত ও ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ১০ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। রাতে ডাকাতির চেষ্টাকালে রোহিঙ্গাদের হাতেই আটক হয়েছিল ৫ জন। আর ঘটনার পর থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে আরও ৫ জনকে আটক করেছে। এ সময় গুলিসহ ২টি দেশীয় তৈরি এলজি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার পর থেকে বালুখালী ও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আটকদের মধ্য কুতুপালং ক্যাম্প তেলীপাড়া এলাকার মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (৩২), সুলতান আহমদের ছেলে মোহাম্মদ ইসমাইল (২৭), নুর মোহাম্মদ মো. ইউনুছ, বালুখালী থেকে নুরুল বশর (৩০) ও ইলিয়াসের (২৮) নাম পাওয়া গেছে। বাকিদের নাম পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছে আটককারী কর্তৃপক্ষ। আটকদের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র। প্রত্যক্ষদর্শী বেদার উদ্দিন জানায়, শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে বালুখালী ক্যাম্পের জি-২৭ থেকে ৫ জন, এ-ব্লক থেকে ৩ জন, এ-৭ থেকে ২ দুজনসহ মোট ১০ জনকে অস্ত্রসহ আটক করে যৌথ বাহিনী। বালুখালী ক্যাম্পের এ-২ ব্লকের লালু মাঝির বরাত দিয়ে পালংখালী ইউপির বালুখালী এলাকার সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী জানিয়েছিলেন, শুক্রবার রাতে ক্যাম্পে ডাকাতদল হানা দিয়ে ডাকাতির চেষ্টা করে। এ সময় ৫ জনকে ক্যাম্পবাসী আটক করে। এরা সবাই রোহিঙ্গা। তাদের মধ্য দু'জনের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্রও জব্দ করা হয়। আটকরা পূর্ব থেকে অপরাধী হতে পারে বলে ধারণা করছেন লালু মাঝি। পরে তাদের সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। প্যানেল চেয়ারম্যান নুরুল আবছার চৌধুরী আরও জানান, ডাকাতির চেষ্টা স্থল ও নলকূপ মিস্ত্রিদের ওপর হামলার ঘটনাস্থল পর্যাপ্ত দূরত্বে। তাই ঘটনা দুটি পৃথক বলে মনে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, নলকূপ বসাতে আসা উত্তরবঙ্গের এসব শ্রমিকদের সঙ্গে ক্যাম্পের কিছু রোহিঙ্গার মতবিরোধ হয়। যার ফলশ্রুতিতে হামলার ঘটনাটি ঘটতে পারে। গুরুত্বর জখম হওয়া নলকূপ মিস্ত্রিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো করা হয় বলেও তিনি জানান। উখিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে একটি মসজিদে থাকা ৪ জন টিউবওয়েল মিস্ত্রিকে একটি রোহিঙ্গা গ্রুপ ব্যাপক মারধর করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে এসব টিউবওয়েল মিস্ত্রিদের ক্যাম্প থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রেরণ করে। রোহিঙ্গা কর্তৃক আটক ও অভিযান চালিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। শনিবার কমিউনিটি পুলিশিং ডে-২০১৭ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি আটকদের বিষয়ে তেমন খোঁজ নিতে পারেননি বলে উল্লেখ করেন ওসি।
Advertisement
এদিকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আটকদের উখিয়া কলেজে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল বলে দাবি করেছে স্থানীয় একটি সূত্র।
সায়ীদ আলমগীর/এমএএস/জেআইএম
Advertisement