মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বের পরাক্রম রাষ্ট্র সৌদি আরবকে ‘শত্রু’ বা ‘অবন্ধুভাবাপন্ন’ রাষ্ট্র হিসেবে মনে করেন শতকরা ৩৫ ভাগ মার্কিন নাগরিক।
Advertisement
সম্প্রতি প্রখ্যাত জরিপ প্রতিষ্ঠান ‘ইউগভ’র এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। আরব নিউজে ওই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। খবর- ওয়াশিংটন পোস্টের।
বিশ্ব পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনে সৌদি আরবের উদ্যোগে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন ও অবরোধ আরোপ করে রেখেছে সৌদিসহ সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর।
ট্রাম্প প্রশাসনের পরোক্ষ মদদে সৌদি জোটের উদ্যোগ মধ্যপ্রাচ্য সংকট তৈরির প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদির রাষ্ট্রীয় সখ্যতা বা মিত্রতা স্পষ্ট মনে হলেও এ জরিপ বলছে ভিন্ন কথা।
Advertisement
একই জরিপে সৌদি জোটের অপর তিন দেশ, এমনকি সংকটে পড়া কাতারের প্রতিও মার্কিন মুল্লুকের জনগণের মনোভাব প্রায় একই রকম।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক অনলাইন গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ইউগভের জরিপ বলছে, সৌদিকে ৩৫ ভাগ মার্কিনি শত্রু ভাবলেও কাতারের ক্ষেত্রে এ হার আশ্চর্যজনকভাবে কম; ৩১ শতাংশ। তবে ৩৭ শতাংশ মার্কিনি সৌদি আরবকে বন্ধুরাষ্ট্র বলে মনে করেন। যেখানে কাতারকে বন্ধুরাষ্ট্র ভাবে মাত্র ২৭ ভাগ মার্কিনি।
কাতার সংকটের অন্যতম হোতা সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি মার্কিনিদের মনোভাব বেশি উঞ্চ বলে জরিপে উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, মার্কিনিদের ৩৯ শতাংশ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম আধুনিক দেশ আরব আমিরাতকে বন্ধুরাষ্ট্র ভাবেন। বিপরীতে দেশটিকে শত্রুজ্ঞান করেন মাত্র ২৪ ভাগ মার্কিনি।
জরিপে দেখা গেছে, মার্কিনিরা কাতারের চেয়ে সৌদি আরব ও আরব আমিরাত সম্পর্কে বেশি জানেন। ২৮ ভাগ মার্কিনি বলেছেন, তারা সৌদি আরব সম্পর্কে কি ভাবছেন জানেন না। আরব আমিরাতের ক্ষেত্রে এ মনোভাব ৩৭ ভাগ মার্কিনির; যেখানে কাতারের ক্ষেত্রে কি ভাবছেন জানেন না ৪৩ ভাগ মার্কিনি।
Advertisement
এছাড়া কাতারের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ৫০ ভাগ মার্কিনির উত্তর ছিল, তারা এ সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ, বিশেষ করে সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচলিত যে মিত্রতার কথা বলা হয়; ইউগভের এই জরিপের ফলে তা কিছুটা ধাক্কা খেল। জরিপে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক যাই হোক, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস এখনও প্রবল।
সন্ত্রাসী গ্রুপকে সহায়তা ও সন্ত্রাসবাদে সহায়তার অভিযোগ তুলে গত ৫ জুন উপসাগরীয় ধনী দেশ কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি জোট। পরে কাতারের ওপর বাণিজ্য অবরোধ আরোপ করে তারা। তবে শুরু থেকেই কাতার সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
মধ্যপ্রাচ্যের চলমান এই সংকটের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করা হয়। যদিও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটির অবস্থার কাতারে।
এসআর/পিআর