সবাই ধরেই নিয়েছিল সেবাস্টিয়ানকে জন্মের পর বাঁচানো যাবে না। চিকিৎসকরাও সেরকমই জানিয়েছিলেন। কারণ তার হৃদযন্ত্রটি দেহে এবং মাথায় ঠিক মতো রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ করতে অক্ষম ছিল। বলা হয়েছিল জন্মের পর গায়ের রঙ হবে নীল। জন্মাবেও বোবা হয়ে।
Advertisement
কিন্তু সময় নষ্ট না করে জন্মের আগেই অস্ত্রোপচার করতে পারলে বাঁচানো যেতে পারে বলে মনে হয়েছিল চিকিৎসকদের। আর সেই ভাবনা থেকেই মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থাতেই হলো হার্টের অস্ত্রোপচার। সুস্থ জীবন নিয়ে পৃথিবীর আলো দেখল সেবাস্টিয়ান। মাতৃগর্ভে অস্ত্রোপচারের নজির বিশ্বে প্রথম।
সেবাস্টিয়ান কানাডার বাসিন্দা ক্রিস্টোফার হ্যাভিল এবং ক্রিস্টিন বেরির প্রথম সন্তান। যে জটিল রোগে সে আক্রান্ত ছিল ডাক্তারি পরিভাষায় তার নাম ট্রান্সপোজিসন অফ গ্রেট আর্টারি (টিজিএ)। এই রোগে হৃদযন্ত্র থেকে রক্ত সঞ্চালন এক রকম বন্ধই হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা নিশ্চিত ছিলেন জন্ম পর্যন্ত অপেক্ষা করলে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।
মেডিকেল টিম গঠন করে মাতৃগর্ভেই অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জটিল এই অস্ত্রোপচারের নাম আট্রিয়াল সেপ্টোপ্লাস্টি। মা’র গর্ভে একটি সুচ ঢুকিয়ে আলট্রাসাউন্ডের সাহায্যে শিশুর হৃদযন্ত্রের সঙ্গে সংযোগস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। সুচের শেষ প্রান্তে লাগানো থাকে একটি ছোট বেলুন।
Advertisement
গত ১৮ মে এই পদ্ধতিতে শিশুটির হার্টের আট্রিয়াল সেপটামে ৩.৫ মিলিমিটারের একটি ছিদ্র করে পাম্পিং-এর সাহায্যে সেখানে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ চালু করেন চিকিৎসকেরা। পরে ২৩ মে জন্ম হয় সেবাস্টিয়ানের। জন্মের পর ফের একবার ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়। সে এখন ভালই আছে।
সেবাস্টিয়ানের মা ক্রিস্টিয়ান বলেন, রোগ যখন ধরা পড়ে পুরো পৃথিবীটাই আমার কাছে অন্ধকার মনে হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসকেরা যা করেছেন তা দারুণ।
মেডিকেল টিমে থাকা একজন কার্ডিওলজিস্ট বলেছেন, মাতৃগর্ভে প্রথম এই পদ্ধতিতে আমরা অস্ত্রোপচার করি। বিশ্বাস ছিল সব কিছুই ভালো হবে। যা ভাবা হয়েছিল তার থেকে অনেক সহজে এই অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়েছে।
এফএ/জেআইএম
Advertisement