বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু আলিমুনের প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে। রোববার বিকেলে কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ নাসির, গজালিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন মাঝি ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার মো. ছালাম শেখ কচুয়া থেকে শিশু আলিমুল ও তার মা ছকিনা বেগম বেগমকে নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে আসেন। পরে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন।
Advertisement
বাগেরহাট সদর হাসপাতালে বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু আলিমুনকে ভর্তি করা হয়েছে এমন খবর শুনে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতারা বিকেলে হাসপাতালে ছুটে যান।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. মনির হোসেন জানান, বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন গ্রহণ করেছেন এ খবর জানতে পেরে তাকে ঢাকায় পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়। সকাল থেকে শিশু আলিমুনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের বুঝিয়ে ঢাকায় নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ নাসির মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
অলিমুনের মা ছকিনা বেগমের সঙ্গে এ প্রতিনিধির কথা হলে তিনি জানান, পরিবারের অন্যদের সঙ্গে আলোচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও আলিমুনের পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি বুঝতে পেরে তার চিকিৎসা করাতে রাজি হওয়ার পর বিকেলে তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Advertisement
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিরল রোগে আক্রান্ত আলিমুনকে সোমবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখে যে পরামর্শ দেবে সে অনুয়ায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর সেক্ষেত্রে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথম পর্যায়ে তাকে বাগেরহাট থেকে ঢাকায় নেয়ার প্রস্ততি রাখা হয়েছে।
বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দর গ্রামের ৬ বছর বয়সী আলিমুনকে নিয়ে পল্লীচিকিৎসক জাহিদুল ইসলাম তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে ভাইরাল হয়ে যায়। একপর্যায়ে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনও আলিমুনকে নিয়ে তার ফেসবুকে পোস্ট দেন। এরপর তিনি জাগো নিউজ কার্যালয়ে ফোন করে শিশু আলিমুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন।
উল্লেখ্য, আলিমুনের জন্মের দুই বছর পর তার মাথাসহ শরীরে বড় বড় টিউমার দেখা দেয়। আলিমুনের তিন বছর বয়সের সময় দিনমজুর বাবা আজাহার শেখ মারা যান। এর কিছুদিন পর মা ছকিনা বড় ছেলে শুকুর আলী ও আলিমুনকে নিয়ে ভীষণ কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করেন। অভাবের সংসারের ঘানি টানতে মা ছকিনা বেগম রাস্তায় দিন মজুরের কাজে নামেন। তিনজনের পেটের আহার জোগাতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হয় ছকিনাকে। গত বছর দেড় আগে রাস্তায় কাজ করতে গিয়ে আরেক দিনমজুরকে দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে বেছে নেন ছকিনা।
বর্তমানে শিশু আলিমুন সোনাকান্দর গ্রামে দিনমজুর চাচা মোজাহার শেখের তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠছে।
Advertisement
শওকত বাবু/এমএএস/আরআইপি