বিশেষ প্রতিবেদন

সাংবাদিক হতে চায় মুক্তা ও হিরা

বড় হয়ে সাংবাদিক হতে চায় জমজ দুই বোন মুক্তা ও হিরা। বাবা ইব্রাহিমেরও ইচ্ছা, বড় হয়ে তারা সাংবাদিক হবে। বুধবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের ৬০৮ (এ-বি) কেবিনে চিকিৎসাধীন বিরল রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশুর চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে গেলে দুই বোন তাদের এ ইচ্ছার কথা জানান।

Advertisement

মুক্তা ও হিরা জমজ হওয়ায় তারা একই শ্রেণিতে পড়তো। কিন্তু মুক্তা বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। দু’জনই স্থানীয় মির্জা নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। হিরা এখন ওই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।

হিরা ও মুক্তার বাবা ইব্রাহিম জাগো নিউজকে বলেন, অনেক হাসপাতালে গেছি, অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। একবার সুস্থও হয়ে গিয়েছিল মুক্তা। এক মাস পর আবার একই সমস্যা দেখা দেয়। তার চিকিৎসা করাতে করাতে জমি-জায়গা শেষ করে ফেলেছি।

তিনি বলেন, মুক্তাকে নিয়ে সাংবাদিকদের লেখালেখির পর এত দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে বুঝতে পারিনি। দেশ-বিদেশ থেকে এখন হাজার হাজার মানুষ ফোন করে মুক্তার খোঁজ-খবর নিচ্ছে। তাকে এত গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে শুধুমাত্র সাংবাদিকদের জন্য। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দুই মেয়েকে সাংবাদিক বানাব। তারাও যেন মানুষের বিপদে এভাবে দাঁড়াতে পারে।

Advertisement

হিরা বলে, দোয়া করবেন মুক্তা যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। সে যেন আবার স্কুলে যেতে পারে। আমরা দু’জন পড়ালেখা করে সাংবাদিক হতে চাই। মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াতে চাই। মুক্তাও একই কথা জানায়।

জাগো নিউজকে অসুস্থ মুক্তা বলে, অনেক দিন হলো স্কুলে যাই না। খুব কষ্ট লাগে। আপনাদের দোয়ায় যদি সুস্থ হই তাহলে ফের স্কুলে যেতে চাই, পড়ালেখা করে অনেক বড় হয়ে মানুষের সেবা করতে চাই।

মুক্তার মা আসমা বলেন, চোখে আর পানি নেই আমাদের। সব সময় মেয়েকে দেখে কেঁদেছি। তার আহাজারি দেখলে আপনিও কাঁদবেন। হিরা যদি না থাকতো মুক্তা আরও অসহায় হয়ে পড়তো। মুক্তার কষ্টটা হিরাকে দেখলে বোঝা যায়।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালের পর থেকে শত শত মানুষ মুক্তাকে একনজর দেখতে ৬০৮ নম্বর কক্ষের সামনে ভিড় করছেন। গতরাত থেকে নির্ঘুম সময় পার করেছে পরিবারটির। মুক্তার বাবা বলেন, নানা শ্রেণির মানুষ ফলমূল নিয়ে মেয়েকে দেখতে আসছেন। কেউ কেউ আর্থিক সহযোগিতাও করছেন।

Advertisement

বুধবার বিকেলে হাবিবুল্লাহ পিয়ার নামে একজন মুক্তাকে ৫০ হাজার, হিরাকে ১০ হাজার এবং তাদের বাবা-মাকে ২০ হাজার টাকা সহযোগিতা করেছেন।

এমএএস/এমএআর/বিএ