বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অালমগীর বলেছেন, নির্বাচন হতে হবে। বিএনপিও নির্বাচন চায়। তবে সেই নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে হবে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। যাতে সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং দেশের সকল মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পায়। কারণ, বিএনপিকে আদালতের বারান্দায় কিংবা জেলে রেখে কোনো নির্বাচন হবে না।
Advertisement
রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ ভাসানী ভবনে নগর বিএনপি (দক্ষিণ) উদ্যোগে সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম-২০১৭ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোটা বাংলাদেশের মানুষ এখন বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। এই সরকার মানুষের জীবনকে দুঃসহ ও অসহনীয় করে তুলেছে। এদেরকে (বর্তমান সরকার) সরিয়ে দেশের মানুষ অতীতে যারা মানুষের আস্থা অর্জন করেছিল সেই বিএনপিকে রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্বে দেখতে চায়। দেখতে চায় খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে।
বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততা রয়েছে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের বরখাস্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার নির্বাচিত মেয়র কাউকে দায়িত্ব পালন করতে দিচ্ছে না। মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখছে। তবে এতে একটা কথা প্রমাণ করে এই অবৈধ সরকার (আওয়ামী লীগ) অনির্বাচিতভাবে ক্ষমতায় এসেছে বলেই নির্বাচিত মানুষদের ভয় পায়। এবং যেহেতু বিএনপির সব মেয়ররা নির্বাচিত তাই তাদেরকে তারা ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
Advertisement
বিএনপির এ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট হচ্ছে এরা মূলত একটি কর্তৃত্ববাদী, একটি সন্ত্রাসী দল। এবং সন্ত্রাস করেই তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। সে জন্য আজকে বন্দুক ও পিস্তল দিয়ে ক্ষমতায় টিকে আছে। অথচ একটি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক বিষয় মোকাবেলা করে রাজনৈতিকভাবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে, ফলে এখন মিথ্যা মামলা, হামলা করে বিরোধীদলকে দূরে রাখতে চায়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, গত ৮ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যে সরকার এসেছে তারা দেশের জনগণকে অতিষ্ট করে ফেলেছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বলতে কিছু নাই। দেশের মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। দেশের প্রতিটি ব্যাংক ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কাজেই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এই আওয়ামী লীগ অপশক্তিকে পরাজিত করে দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আর জিয়াউর রহমান একদলীয় বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। শুধু তাই নয়, আজকের এই আওয়ামী লীগকেও রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন জিয়াউর রহমান।
ঘুরে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুধুমাত্র সাংগঠনিক কার্যক্রম নয়। এটা একদিকে দলকে বিস্তার ও শক্তিশালী করে অন্যদিকে আমরা গণতন্ত্র ও অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে যে লড়াই করছি সেই সংগ্রাম-লড়াইয়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান একটা বড় ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।
Advertisement
এ সময় আবুল হোসেন ঢালী, হাজী মো. শেখ জামাল, শ্রী আকাশ বর্মন, মমতাজ বেগম বেবী, মো. কামরুজ্জামান, শ্রমতি পলিমিত্র প্রমুখ ১০ টাকা চাঁদা রসিদ কেটে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ করেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মহানগর বিএনপি (দক্ষিণ) নেতা শামসুল হুদা, রমেশ দত্ত, তানভীর আহমেদ রবিন বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ঢাকা মহানগর বিএনপি (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার।
এমএম/আরএস/এমএস