জাতীয়

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা

প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর পরিধি ও ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সব কার্যক্রম অব্যাহত রেখে প্রস্তাবিত বাজেটে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

এ খাতের আওতায় কয়েকটি কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে ২৪ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের ৬ শতাংশ।

চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০১৬-১৭ সালে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ১৯ হাজার ২৯১ কোটি টাকা, যা উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন বাজেটের ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ১৭ হাজার ৮০ কোটি টাকা। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে এ বরাদ্দ রেখে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন,‘দুষ্টু,দারিদ্র্য ও পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে আমরা বয়স্ক ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা-স্বামী নিগৃহীতা-দুঃস্থ মহিলা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি, একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ প্রকল্প, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি, টিআর, জিআর, চর জীবিকায়নসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে চলেছি, যা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।`

Advertisement

প্রস্তাবিত বাজেটে ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে বয়স্ক ভাতাপ্রাপ্তরা জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা করে পাবেন। একই সঙ্গে উপকারভোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৩১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ৩৫ লাখে উন্নীত করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী জানান, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের ভাতা ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৬০০ টাকা করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছর থেকে তারা এ হারে ভাতা পাবেন। আর উপকারভোগীর সংখ্যা ১১ লাখ ৫০ হাজার থেকে ১০ ভাগ বাড়িয়ে ১২ লাখ ৬৫ হাজার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আগামী অর্থবছর থেকে অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধীরা ৬০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন। উপকারভোগীর সংখ্যা সাড়ে সাত লাখ থেকে বাড়িয়ে করা হচ্ছে আট লাখ ২৫ হাজার।

‘আগামী অর্থবছর থেকে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমের অধীনে বিভিন্ন স্তরে প্রদেয় বিশেষ ভাতা/বয়স্ক ভাতা ৬০০ টাকার পরিবর্তে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। উপকারভোগীর সংখ্যা ছয় হাজার ৯৭০ জন থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে সাত হাজার ৫৫০ জন।’

Advertisement

সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কার্যক্রমের অধীনে উপকারভোগীরা মাসে ৬০০ টাকা করে ভাতা পান। আগামী অর্থবছর থেকে তারা ৭০০ টাকা করে ভাতা পাবেন। এজন্য সরকারকে এ খাতের বরাদ্দ ছয় কোটি ৩২ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে।

অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিত বলেন, আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির হার প্রাথমিক স্তরে ৪০০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরে ৬০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ৭০০ টাকা এবং উচ্চতর স্তরে ১২০০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে উপকারভোগীর সংখ্যা শুধু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার এবং ৭০ হাজারের স্থলে ৮০ হাজার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির অধীনে বরাদ্দ ৩০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রতিজন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা সহায়তা পাবেন।

চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, এ খাতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির অধীনে ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে খাদ্য সহায়তার পরিবর্তে উপকারভোগীদের জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।

এমইউএইচ/এমএমএ/পিআর