দেশজুড়ে

প্রবাসীর হাতে ধর্ষণের রোমহর্ষক বর্ণনা দিল ১২ বছরের শিশু

সিলেটের বিয়ানীবাজারে লন্ডন প্রবাসীর হাতে ধর্ষণের রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে ১২ বছরের শিশু। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় সোমবার বিকেলে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেয় শিশুটি।

Advertisement

জবানবন্দিতেতে মেয়েটি জানায়, মাত্র ১৭ দিনে তাকে অনকেবার ধর্ষণ করা হয়েছে।  তার মা-বাবার ওপর ধর্ষক সারোয়ারের নির্যাতনের কথাও সে আদালতকে জানিয়েছে।

এদিকে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় সোমবার দুপুরে ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে বিয়ানীবাজার থানায় প্রবাসী সারোয়ারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। সারোয়ার বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের দেউলগ্রামের লতই মিয়ার ছেলে।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ এখনো ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিয়ানীবাজার থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. মোখলেছুর রহমান জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার সকালে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন।

Advertisement

তিনি জানান, ১৭ দিনে বহুবার শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রতিদিন ২-৩ বার তাকে ধর্ষণ করতেন সারোয়ার আহমদ। হাত-পা টিপে দেয়ার কথা বলে তাকে বিছানায় নিয়ে আসতেন সারোয়ার। এরপর কখনো জোর করে, কখনো লন্ডন নেয়ার কথা বলে আবার কখনো যৌনশক্তিবর্ধক ওষুধ সেবন করিয়ে শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করা হতো।

বিয়ানীবাজার থানা পুরিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল বাশার বদরুজ্জামান জানান, গত কয়েকদিন থেকে সারোয়ারের স্ত্রী তার বাপের বাড়িতে বসবাস করছেন। এই কদিনে মেয়েটির ওপর বেশি নির্যাতন করা হয়।

মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, শিশুটি তার মায়ের কাছে ধর্ষণের কথা জানালে বিষয়টি সারোয়ারের মা ও স্ত্রীকে জানানো হয়। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। সারোয়ার তার স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেন শ্বশুরবাড়িতে। এরপর তিনি শিশুটিকে রেখে দেন তার নিজ ঘরে। শিশুটিকে নিয়ে তার বাবা-মা বাড়ি চলে যেতে চাইলে তাদের ওপর নির্যাতন চালান সারোয়ার।

সর্বশেষ নির্যাতনের মাত্রা এতটাই প্রকট হয় যে, মেয়েটিকে রেখেই পালিয়ে আসেন তারা। এর আগে একই বিষয় নিয়ে নিজের স্ত্রীকেও বেদম মারধর করেন সারোয়ার। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। লন্ডন প্রবাসীর বাড়িতে একটি শিশুকে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়ে সারোয়ারের বাড়িতে ছুটে যান স্থানীয় কুড়ারবাজার ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের। এ সময় ওই বাড়িতে সারোয়ারের স্ত্রী ছিলেন না। কিন্তু তিনিও শিশুটিকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন।

Advertisement

বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে সারোয়ার আহমদকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন। রোববার ভোরে র্যা বের হাতে আটক হওয়া আসামিকে সোমবার আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। শিশুটির মেডিকেল পরীক্ষা শেষ হয়েছে।  বর্তমানে শিশুটি তার মা-বাবার জিম্মায় রয়েছে।

এদিকে সোমবার দুপুরে বিয়ানীবাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সারোয়ারের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী তামান্না সুলতানা স্বামীর মুক্তি দাবি করেছেন।

ছামির মাহমুদ/আরএআরএমএস