সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে জোর দিয়েছেন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নভুক্ত (আইপিইউ) দেশের সংসদ সদস্যরা। তারা বলেছেন, আইপিইউ সদস্যভুক্ত কোনো দেশ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে কোনোভাবেই সমর্থন করতে পারবে না এবং তা মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া কোন কৌশলে এগুলো প্রতিরোধ করা যায় তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
Advertisement
সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইপিইউ’র ১৩৬তম সম্মেলনের তৃতীয় দিন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং শান্তি ও বিশ্ব নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলা এ আলোচনায় আইপিইউ’র প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন। অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশের স্পিকার বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়। এ প্রবৃদ্ধিও সুফল আনবে না যদি আমরা তা পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে পৌঁছে দিতে না পারি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিশ্বের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে নারী একটি বড় অংশ।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে আরও বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে এবং এক্ষেত্রে আমাদের অর্থনৈতিক কম্পোনেন্টগুলো (প্রয়োজনীয় অঙ্গ) সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্য এন ইভান্স নিজ দেশের পার্লামেন্টে সাম্প্রতিক হামলার বর্ণনা দিয়ে বলেন, এমন কোনো দেশ নেই, যারা সন্ত্রাসবাদের বাইরে রয়েছে। এই সন্ত্রাসবাদ সাম্যবাদবিরোধী। এটি অর্থনৈতিকভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। এটাকে সবাই মিলে মোকাবেলা করতে হবে।
বাংলাদেশের শিক্ষা, বিশেষ করে নারী শিক্ষার অগ্রগতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, এ দেশে (বাংলাদশ) নারী শিক্ষার অগ্রগতি বিশ্ববাসীর কাছে অনুকরণীয়। কুয়েতের এমপি আর আলনুসাফ বলেন, সন্ত্রাস দমনে আমাদের বিধানের প্রয়োজন আছে। আমরা মাঠপর্যায়ে অনেক কাজ করি কিন্তু সংসদে এর কোনো মিল পাওয়া যায় না। এ জন্য কাজে সমন্বয় আনতে হবে।
Advertisement
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোষিত মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন ও সকল মানুষের বৈষম্য ও মর্যাদা রক্ষায় কাজ করছেন। তিনি বাংলাদেশকে উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠাসহ নারী-পুরুষের সমতা রক্ষায় কাজ করছেন। বাংলাদেশের নীতি হচ্ছে সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা, যা এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। তিনি আরও বলেন, এ দেশের সরকার ও জাতীয় সংসদ গণতন্ত্র রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
মেক্সিকোর প্রতিনিধি এম ভারগস বারসিলোনা বলেন, আমি এখানে একজন নারী হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করছি। আমাদের সংসদ এবং রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে তারই এই প্রমাণ। তবে আমাদের দেশে এখনও অনেক সমস্যা রয়েছে। নারীপাচার বদ্ধ হয়নি। সেখানে নারীদের সংবিধানে যে অধিকার দিয়ে রেখেছে তা সঠিকভাবে প্রতিপালন হচ্ছে না। সুদানের ই এফ মুনছুর বলেন, মানবাধিকার ও মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষায় প্রতিটি সংসদের দায়িত্ব রয়েছে। কারণ ইসলাম আমাদের নৈতিকতার শিক্ষা দেয়, তাই আমাদের সবাইকে আইপিইউ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।
ভিয়েতনামের প্রতিনিধি টি পি টং বলেন, তার দেশ এসডিজির নির্ধারিত অনেক লক্ষ্য ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছে। যার মধ্যে শিক্ষা, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছে। যুবসমাজ এবং লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানোন্নয়নে কাজ করছে। ভিয়েতনামের মানুষের মধ্যে সম্পদের অসম বৈষম্য দূরীকরণে দেশটির সরকার কাজ করছে। কম্বোডিয়ার প্রতিনিধি এস ইয়াং বলেন, দেশটিতে স্বাধীনতার পর সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।
এইচএস/আরএস/ওআর/এমএস
Advertisement