ফিচার

গানে গানে খায়রুল ওয়াসির পথচলা

খায়রুল ওয়াসি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন মঞ্চে উঠে গান গাইবেন। মায়ের কণ্ঠে গান শুনে এ বাসনা দিন দিন বাড়তে থাকে। সেই থেকে মায়ের কাছেই গানের হাতেখড়ি তার। স্বপ্ন আর সাধনা থাকলে জগতে সবকিছুই সম্ভব। সম্ভব হয়েছে তার ক্ষেত্রেও। তাইতো ‘খায়রুল ওয়াসি’ বর্তমানে সংগীতজগতের তরুণ কণ্ঠশিল্পীর নাম।খায়রুল ওয়াসির জন্ম ১৯৮৮ সালের ২২ আগস্ট ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার জগন্নাথদী গ্রামে। বাবা কৃষক, মা গৃহিণী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। সংগীতভক্ত পরিবারে জন্ম তার। মা গান গাইতেন। তা দেখেই খায়রুলের আগ্রহ জন্মে। দ্বিতীয় শ্রেণিতে বিদ্যালয়ের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় সুফিগানের মাধ্যমে প্রথম মঞ্চে পা রাখেন। এরপর শিক্ষাজীবনের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সংগীতের আসর মাতিয়ে রাখেন খায়রুল। মধুখালী মাহমুদুন্নবী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি, ঢাকা বিএফ শাহিন কলেজে এইচএসসি এবং ঢাকা কলেজ থেকে ইংরেজিতে স্নাতকসহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করলেও গানই ছিলো তার প্রাণ। এমনকী ২০০৫ সালে ঢাকায় পড়াশোনার জন্য এলেও সংগীতচর্চায় ছেদ পড়েনি। ২০১০ সাল পর্যন্ত ছায়ানটে তালিম নেন। সেখানে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্কলারশিপ পেয়ে পড়াশোনা করেন। ২০১৫ সালে ‘আড়ং ডেইরি-চ্যানেল আই বাংলার গান’ প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ নির্বাচিত হন। তখন থেকে বিস্তৃত হতে থাকে গানের জগত। এরপর বিভিন্ন স্টেজ শো এবং টিভি প্রোগ্রাম করে সময় কাটে খায়রুলের। এছাড়াও তিনি গীতিকার এবং সুরকার। খায়রুলের গানের গুরু শ্যামল কুমার ভৌমিক, অবিনাশ চন্দ্র দাস এবং নাদিরা বেগম। তিনি মূলত লোকগীতি, মুর্শিদী, ভাটিয়ালি, লালনগীতি, জারি ও ভাওয়াইয়া গান গেয়ে থাকেন। এ পর্যন্ত তার কাজের মধ্যে ঢাকা কলেজের থিমসংটি তার করা। এছাড়া জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০তম ব্যাচের থিমসংটিও তার। যার সংগীত পরিচালনা করেছেন বাপ্পা মজুমদার। তিনি ২০১৭ সাল পর্যন্ত চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। তবে সংগীতজীবনের পাশাপাশি আর কোনো পেশাকে তিনি ধরে রাখতে পারেননি। কেননা দুই-দুইটা চাকরি কিছুদিন করে আবার ছেড়ে দিয়েছেন। ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত চাকরি করা সম্ভব হয়নি।সেজন্য সংগীতকেই পেশা হিসেবে নিতে চান তিনি। সম্প্রতি ভালোবাসা দিবসে তার মিউজিক্যাল ফিল্ম ‘পাগলামি’ প্রকাশ হয়। জুবায়ের মোস্তফার চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় ফিল্মটি ব্যাপক সমাদৃত হয়। লোকসংগীতের এ শিল্পীর এটি প্রথম মিউজিক ভিডিও। গানটির কথা ও সুর করেছেন তিনিই। এতে মডেল ছিলেন তানভীর আজাদ ও কারিন নাজ।মিউজিক ভিডিওটির সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক ও নির্বাহী প্রযোজক ছিলেন সৈকত ইসলাম। কস্টিউম পরিকল্পনা করেছেন সুকন্যা নাজ। পোস্ট প্রোডাকশনে ছিলেন রবিউল হোসেন সোহেল। অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রো মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে ফিল্মটি প্রচার হয়। এছাড়া ইউটিউব চ্যানেল গান বাজনায় তার সব গান পাওয়া যায়। সম্প্রতি তার লেখা ও সুরে নির্ঝরের সঙ্গে গাওয়া ‘মেঘলা দিন’ শিরোনামের একটি গান শিগগিরই প্রকাশ হবে। প্রো মিউজিকের ব্যানারে গানটির সংগীত পরিচালনা করেছেন ইয়াজদানি।সংগীতজীবন নিয়ে খায়রুল ওয়াসি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সংগীতকেই পেশা হিসেবে নিতে চাই। পরিবারের কাছ থেকেই সংগীতের প্রতি এমন ভালোবাসার জন্ম হয়েছে। তাই শেষপর্যন্ত গান নিয়েই থাকতে চাই।’এসইউ/জেআইএম

Advertisement