রাজধানীর গুলশান-১ এ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া পণ্য বিশেষ ছাড়ে বিক্রি করছে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানিরা। ডিএনসিসি মার্কেটের সামনের ফাঁকা জায়গায় তারা এসব পণ্য বিক্রি করে দিচ্ছেন।শুক্রবার নামিদামি এসব পণ্য তুলনামূলক কম দামে কিনতে ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ার পাশাপাশি তুলনামূলক কম দামে কেনা-কাটা করার সুযোগ পাওয়ায় ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।সরেজমিনে দেখা যায়, ৪০০ টাকার লোশন ২৫০-২২০ টাকায়, ১৫০ টাকার ল্যাডিস পার্টস ৫০ টাকায়, ৩ হাজার ২০০ টাকার কম্বল ২ হাজার ৬০০, বাচ্চাদের ৮০০ টাকার সোয়েটার ৫০০, ১ হাজার ২০০ টাকার চার পিস প্লেট ১২০ এবং ৩৬০ টাকার ৬টি কাপ ১০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও নানা ধরনের গৃহস্থালি সামগ্রির পাশাপাশি বিভিন্ন পণ্য বিশেষ মূল্য ছাড়ে বিক্রি হচ্ছে।গুলশান ২ নম্বর থেকে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এই মার্কেটে কেনা-কাটা করতে এসেছেন রিয়াদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাচ্চার জন্য একটা সাইকেল ৩ হাজার টাকায় কিনেছি, যেটার বাজারমূল্য সর্বনিম্ন সাড়ে ৪ হাজার টাকা। এছাড়া বডিস প্রে, লোসন, চকলেটও অনেক কম দামে কিনেছি।আরেকজন ক্রেতা বনানীর মৌটুসি আক্তার। তিনিও বিভিন্ন পণ্য কিনেছেন এখান থেকে। তিনি বলেন, বাসার কিচেন সামগ্রী কিনেছি। এর মধ্যে দুইটা ফ্রাইপেন, ডিনার সেট, ব্লেন্ডার আছে। এগুলো বাজারে সাধারণ দামের চেয়ে কম মূল্যে পেয়েছি বলেই কিনলাম।এখানে বাচ্চাদের পণ্য বিক্রি করছিলেন ফায়সাল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, এই মার্কেটে তার ১০৯ নম্বর দোকানটি ছিল। পুড়ে যাওয়ার কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তাই যেসব মালামাল গোডাউনে ছিল, বা যেসব কম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেগুলো লস করে কম দামেই বিক্রি করে দিচ্ছি। বাচ্চাদের এই রুমিটার আগে বিক্রি করেছি ২ বা আড়াই হাজার টাকায়। এখন বিক্রি করছি ১ হাজারে। এছাড়া স্ট্রকার আগে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও এখন ক্রেতারা ৩ হাজার টাকায়ও নিতে রাজি হচ্ছে না।অন্যদিকে আরেক বিক্রেতা হাবিবুর রহমান জানান, মার্কেটের আগুনের তাপে গোডাউনের যেসব পণ্যে কিছুটা কালো দাগ হয়েছে সেগুলো হওয়ায় তা পানির দামে বিক্রি করে দেয়ার চেষ্টা করছি। ২০০০ টাকা মূল্যের প্লেটসেট ৩০০ টাকায় বিক্রি করলাম।উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি (সোমবার) রাতে ডিএনসিসি মার্কেট কম্পাউন্ডের পূর্ব পাশের কাঁচাবাজার ও সুপারমার্কেট অংশে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ শতাধিক দোকান পুড়ে যায়। এছাড়া পূর্ব পাশের কাঁচা মার্কেটের বড় একটি অংশ ধসে পড়ে। এতে প্রায় হাজার কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়।এএস/জেডএ/পিআর
Advertisement