দেশজুড়ে

২০১ গম্বুজ মসজিদ দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড়

ঈদুল আজহা উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার পাথালিয়ায় নির্মাণাধীন ২০১ গম্বুজ জামে মসজিদ কমপ্লেক্স দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় জমেছে। ঢাকার মিরপুর থেকে আগত এক ঝাক তরুণ জানায়, ফেসবুক থেকে মসজিদটি সম্পর্কে জেনে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মসজিদটি দেখতে এসেছি। এতো সুন্দর মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে জেনে আমরা খুবই আনন্দিত। ঢাকার বাসিন্দা ও দর্শনার্থী শরিফুল হক সপরিবারে মসজিদটি দেখে তার ব্যক্তিগত মন্তব্যে জানান, ইতিহাসের পাতায় এই অন্যন্য স্থাপত্য কালজয়ী হয়ে থাকবে। পরিবারের সদস্যরা অনেক দিন ধরে মসজিদটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছিল। সময়ের অভাবে হচ্ছিল না, ঈদের ছুটি পেয়ে দেখতে আসলাম। স্বচক্ষে দেখে মনটা ভরে গেল।বগুড়ার দর্শনার্থী রফিক মিয়া জানান, লোকমুখে শুনে মসজিদটি দেখার বাসনা মনের মধ্যে জেগেছিল। আজ দেখে খুব ভালো লাগলো।টাঙ্গাইল শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার ও গোপালপুর উপজেলা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে নৈসর্গিক শোভামণ্ডিত ছায়া সুনিবিড় গ্রাম পাথালিয়া। এ গ্রামেই ঝিনাই নদীর তীরে নির্মিত হচ্ছে বাংলার ঐতিহাসিক ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট দক্ষিণ পাথালিয়া জামে মসজিদ কমপ্লেক্স। বিশ্বের যেসব দেশে আকর্ষণীয় বৃহৎ মসজিদ রয়েছে তার মধ্যে এটি বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টিকারী ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। আল্লাহ এ ঘরটি বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে নতুন করে সুপরিচিত করে তুলতে সহায়ক হবে। মসজিদটিতে প্রচুর দেশি বিদেশি পর্যটক ও অলি আউলিয়ার আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন দর্শনার্থীরা।দর্শনার্থী মুক্তার হাসান বলেন, শুধু এই মসজিদটির জন্য এক সময় গোপালপুর হবে বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।জানা যায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে এই ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ। এ মসজিদের পাশেই নির্মিত হচ্ছে বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের নামে ৪৫১ ফুট/১৩৮ মিটার ৫৭ তলা বিশিষ্ট মিনার। আর এ মিনারটি হবে বিশ্বের সব চাইতে উঁচু ইটের মিনার। এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও রফিকুল ইসলামের ভাই মো. হুমায়ুন কবির জানান, নিজেদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন অবস্থাতেই মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় হয়েছে। শবে বরাত ও শবে কদর উপলক্ষে ওয়াজ এবং দোয়া মাহফিলের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সার্বক্ষণিক এ মসজিদের দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে ৭ কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত মনোরম পরিবেশে সুদৃশ্য এ মসজিদটির নির্মাণ খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে ২০১৩ সালে ১৩ জানুয়ারি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। প্রায় ৪৫০ শতাংশ জমির উপর নির্মাণাধীন মসজিদের ইতোমধ্যেই অধিকাংশ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ২০১৬ সালের মধ্যে মসজিদের কাজ শেষ হবে এবং ২০১৭ সালের প্রথম দিকে পবিত্র কাবা শরীফের ইমামের উপস্থিতি ও ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। নির্মাতাদের প্রত্যাশা, শৈল্পিক স্থাপনা হিসেবে এ মসজিদটি অনন্য বৈশিষ্ট্যের এক প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে। মসজিদের দেশ বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিচয় করিয়ে দেবে নতুন করে। ইতোমধ্যেই নির্মাণাধীন অবস্থায় মসজিদটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য পর্যটক নির্মাণ কাজ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। এলাকার লোকজনের মধ্যে দেখা দিয়েছে প্রাণ চাঞ্চল্য।এসএস/এমএস

Advertisement