প্রতিবছরই বিপুল সংখ্যক মানুষ পরিবার পরিজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য শহর ছেড়ে গ্রামে যায়। তাদের যাত্রা নিরাপদ এবং নির্বিঘ্ন করাটাই এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি। বিশেষ করে ঈদযাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে যানজট চরম আকার ধারণ করে। এ নিয়ে নিয়ে মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা পরিসীমা নেই। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার এখন থেকেই। আশার কথা হচ্ছে, এবার যানজট নিরসনে এরই মধ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থার কথা জানা যাচ্ছে। আসন্ন ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে সড়কে ১ হাজার রোভার স্কাউট সদস্য স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করবে। বিশেষ করে পশুর হাট সংলগ্ন সড়কে পুলিশের পাশাপাশি রোভার স্কাউট সদস্য যানজট নিরসনে কাজ করবে। গত বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমন কথাই জানান। মন্ত্রী জানান, এবারের ঈদযাত্রায় ঢাকা হতে বিভিন্ন জেলায় চলাচলের জন্য বিআরটিসির স্পেশাল সার্ভিসে ৪শ’টি বাস থাকবে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে ঈদের আগের দিন সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী ডিপোতে ৫০টি এবং চন্দ্রা, নবীনগর, সাভার ও ইপিজেড-এ ৩০টি বিআরটিসির বাস যাত্রী পরিবহনের জন্য অপেক্ষমাণ (স্ট্যান্ডবাই) থাকবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের ঈদে ফিটনেসবিহীন গাড়িতে পশু পরিবহন না করতে বলা হয়, সেজন্য উৎসমুখগুলোতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ধরনের কথা প্রতিবছরই বলা হলেও শেষ পর্যন্ত দুর্ভোগ থেকে রেহাই পায় না মানুষজন। এবার এসব ব্যাপারে যে কথা বলা হয়েছে তা যেন কেবল কথার কথা হিসেবেই না থাকে সেটি দেখতে চায় মানুষ। দূরপাল্লার বাসগুলো যাতে ঈদের সময় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে না পারে সে ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষকে নজরদারি চালাতে হবে। অননুমোদিত বাস চলাচলের ব্যাপারেও দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ ঈদে মুনাফার লোভে লোকাল বাসও হাইওয়েতে চলে। এগুলোর ফিটনেস না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই রাস্তায় বিকল হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে রাস্তা থেকে নষ্ট বাস সরানোর তেমন কোনো ব্যবস্থা থাকে না। এ কারণে দেখা দেয় তীব্র যানজট। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অননুমোদিত বাস যাতে চলতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। কথা এই যে, কেবল নির্দেশ দিলেই হবে না, এটি যাতে পালন করা হয় তার দিকেও নজর রাখতে হবে। রাস্তার ওপর গরুর হাঁট বসার কারণেও দেখা দেয় তীব্র যানজট। রাস্তায় যাতে গরুর হাঁট বসতে না পারে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। বিপুল সংখ্যক মানুষ যারা মাটির টানে প্রিয়জনের সান্নিধ্যে ঈদ করতে গ্রামে যাবেন তাদের আনন্দ যেন যাত্রাপথের ভোগান্তিতে নষ্ট না হয়ে যায় সেইদিকে নজর দেওয়াই এখনকার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। এ ব্যাপারে কোনো উদাসীনতা কাম্য নয়।এইচআর/আরআইপি
Advertisement