ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজ নোভা হোসেন সেলিমের হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে তার বন্ধু শামীম হোসেন।বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে শামীমের স্বীকারোক্তি মতে লাশ উদ্ধারের জন্য ঠাকুরগাঁও টাঙ্গন ব্যারাজে অভিযান চালায় রংপুর ফায়ার সার্ভিসের ডুুবুরি দল ও পুলিশ। প্রায় ২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও লাশ উদ্ধার করতে পারেনি ডুুবুরি দল।মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ের সালন্দর মাদ্রাসা পাড়া এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে নোভা হোসেন সেলিম বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। এরপর থেকে পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে নিখোঁজ সেলিমের মা সেলিনা বেগম তিনজনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ শামীম ও মির্জা আলী নামে দুইজনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করলে আসামিরা জানান সেলিমকে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ বাক্সের ভেতর তালাবদ্ধ অবস্থায় টাঙ্গন ব্যারাজ এলাকায় নদীতে ফেলে দেয়া হয়।পরে ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুকান্ত সাহার আদালতে শামীমের জবানবন্দি গ্রহণ করে তা রেকর্ড করা হয়। এ সময় শামীম আদালতে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বন্ধু নোভা হোসেন সেলিমের হত্যার বণর্না দেয়। এ তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাশেদুল ইসলাম। শামীম হোসেন তার স্বীকারোক্তিতে বলেছে, আমি ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সালন্দর মাদ্রাসা পাড়ায় আমার মামার বাসায় থাকতাম। এ সময় সেলিমের সঙ্গে খুব ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই সুবাদে সেলিমের বোনের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি হয়। কিছুদিন পর সেলিম ওই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে আমাকে নানাভাবে হুমকি দেয়। একদিন সেলিমকে মামার বাসায় ডেকে নিয়ে আসি। সেলিম তার বোনের বিষয়ে আমাকে সতর্কতার কথা উঠলে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আমি সেলিমের গলায় একটি ছুরি ঢুকিয়ে দেই। কিছুক্ষণের মধ্যে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে সে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। পরে সেলিমের লাশ একটি বাক্সে করে অটোরিকশা যোগে সদর উপজেলার রাজাগাঁও এলাকার টাঙ্গন ব্যারাজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাই। সন্ধ্যায় ব্যারাজের নদীতে লাশের বাক্সটি ফেলে দেই। সেলিমের মা সেলিনা বেগম জানান, পরিকল্পিতভাবে শামীম আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে খুন করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার লাশ আমরা পাইনি। শামীমের কথা মতে আদালতের নির্দেশে রংপুর থেকে ডুবুরি দল অভিযান চালালেও লাশ উদ্ধার করতে পারেনি। আমি এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি চাই।ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ জানান, তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আসামির স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ ও ডুবুরি দল অভিযান চালালেও লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।রবিউল এহসান রিপন/এমএএস/পিআর
Advertisement