খেলাধুলা

কলম্বোয় সুযোগ পেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন শেখ মেহেদী

কলম্বোয় সুযোগ পেয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন শেখ মেহেদী

স্পিনার হয়েও নতুন বলে বল করতে পারেন। বিশেষ করে বাঁ-হাতি ওপেনার ও টপ অর্ডার এবং মিডল অর্ডারদের বিপক্ষেও তার বোলিংটা বেশ কাজে দেয়। বিপিএলে ক্রিস গেইলের মত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাটারের বিপক্ষেও সফল হওয়ার একাধিক রেকর্ড আছে শেখ মেহেদীর।

Advertisement

বাংলাদেশ দলের পক্ষেও তার ট্র্যাক রেকর্ড ভালোই ছিল; কিন্তু গত এক বছর বা তার কিছু বেশি সময় ধরে ঠিক নিজেকে মেলে ধরতে পারছিলেন না এই অফস্পিনার।

গত বছর মে-জুনে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের বিপক্ষে পরপর পাঁচ ম্যাচে একদমই সাফল্য পাননি শেখ মেহেদী। ওই পাঁচ খেলার ৪টিতে ছিলেন উইকেটশূন্য। আর একটি মাত্র খেলায় পেয়েছেন ১ উইকেট (জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ১/১৮)।

তারপর ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেকে আবার ফিরে পেলেন। কিংস্টনে ১৩ রানে ৪ ক্যারিবীয় ব্যাটারকে আউট করে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ৪ উইকেট শিকারি হয়েছিলেন। এরপর ২০২৫ সালের ১৭ মে পর্যন্ত পরপর ৩ ম্যাচে সমান ২টি করে উইকেট জমা পড়ে তার ঝুলিতে। এ বছর মে মাসের তৃতীয় ও শেষ সপ্তাহে পরপর ২ ম্যাচে সে ধারাবাহিকতা থাকেনি।

Advertisement

প্রথমে আরব আমিরাত আর পরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২ ম্যাচে যথাক্রমে ৩৬ রান দিয়ে উইকেট পাননি। আজ কলম্বোয় আবার সুযোগ পেয়েই নিজেকে মেলে ধরলেন অফস্পিনার শেখ মেহেদী। মেহেদী হাসান মিরাজের পরিবর্তে বুধবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে সুযোগ পেয়েই স্পিন জাদুতে লঙ্কানদের কাবু করলেন।

বাঁ-হাতি শরিফুল ইসলামের সাথে বোলিং শুরু করা শেখ মেহেদী আজ কলম্বোয় ক্যারিয়ারসেরা বোলিং নৈপুণ্য উপহার দিয়েছেন। এদিন নিজেকে ছাড়িয়ে গেছেন এই অফব্রেক বোলার। তার আগের সেরা বোলিং ফিগার ছিল ১৩ রানে ৪ উইকেট। আজ তা ছাড়িয়ে ১১ রানে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে ভেঙে দিলেন লঙ্কান ব্যাটিং মেরুদণ্ড।

বরাবরই বাঁ-হাতিদের বিপক্ষে তার ট্র্যাক রেকর্ড ভাবো। বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে অফস্ট্যাম্প ও তার আশপাশে বল ফেলে জাতীয় দলের বাইরেও অনেক উইকেট তুলে নেয়ার রেকর্ড আছে শেখ মেহেদীর। আজ বুধবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

এদিন বোলিংয়ে এসে প্রথম বলে চার খেয়েও প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দিয়েছেন বাঁহাতি লঙ্কান টপ অর্ডার কুশল পেরেরা। মেহেদীর ৪ উইকেটের মধ্যে কুশল পেরেরার সাথে অধিনায়ক ও আরেক বাঁহাতি চারিথ আসালঙ্কাও ছিলেন। এছাড়া ডানহাতি ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা আর ডানহাতি মিডল অর্ডার দিনেশ চান্দিমালও শেখ মেহেদীর স্পিনজালে ধরা পড়েন।

Advertisement

বাঁ-হাতি কুশল পেরেরা অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে ব্যাট পেতে ধরা পড়েন প্রথম স্লিপে। আর লঙ্কান ক্যাপ্টেন আসালঙ্কা বোল্ড হন সোজা ডেলিভারিতে। ২ ডানহাতি ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা আর দিনেশ চান্দিমাল আউট হন টার্নের বিপক্ষে খেলতে গিয়ে।

প্রথম ২ ম্যাচে একাদশে জায়গা পাননি। একই ক্যাটাগরির মেহেদী হাসান মিরাজ খেলেছেন; কিন্তু মিরাজ ব্যাট ও বলে কিছুই করতে না পারায় আবার সুযোগ পেয়েছেন শেখ মেহেদী। আর সে সুযোগ যত ভালভাবে কাজে লাগানো যায়, ঠিক তত ভালভাবেই কাজে লাগালেন।

বোলিংয়ের সূচনায় আঘাত হেনে লঙ্কানদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেন শেখ মেহেদী। তারপর যার ব্যাটে স্বাগতিকরা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল সেই ডানহাতি ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কাকে ৪৬ রানে (৩৯ বলে) ফিরিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রুও উপহার দেন তিনি। শেষ ওভারে শরিফুল ইসলাম ২২ রান দিয়ে ফেলার পরও শেখ মেহেদীর বোলিং কার্যকরিতায়ই ব্যাটিং পিচেও শ্রীলঙ্কা থামলো ১৩২ রানে।

এআরবি/আইএইচএস