মনে করুন, আপনি মনোমুগ্ধকর পরিবেশে রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন। দুই পাশে সারি সারি গাছ, মাঝখানে প্রশস্ত, মসৃণ ও গর্তহীন সড়ক। গতি বাড়িয়ে ছুটে চলার সময় মাথায় ছায়া ফেলছে শীতল বৃক্ষরাজি। কিন্তু হঠাৎ করেই রাস্তার মাঝখানে চলে এলো সারি সারি গাছ। মুহূর্তেই আপনার রঙিন পথচলা পরিণত হলো ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নে।
Advertisement
এতক্ষণ বিষয়টি শুধু ভাবনার জগতে থাকলেও, ভারতের বিহার রাজ্যের জেহানাবাদ জেলায় আসলেই এমন ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের রাজধানী পাটনা থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে ১০০ কোটি রুপি ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে একটি বিপজ্জনক ‘সাজানো মৃত্যুপুরী’। এ ঘটনায় বিহারের অবকাঠামোগত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন নিয়ে ভারতব্যাপী প্রশ্ন উঠেছে।
পাটনা-গয়া প্রধান সড়কের ৭ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সম্প্রসারিত এই রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য গাছ। ফলে গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে চালকদের প্রতিনিয়ত ‘জিগজ্যাগ’ পদ্ধতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে, যেন বাস্তব কোনো ভিডিও গেমে অংশ নিচ্ছেন তারা। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে।
কেন গাছ কাটা হলো না?
Advertisement
জেলার প্রশাসন যখন রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে, তখন বন বিভাগকে গাছ কাটার জন্য অনুমতির আবেদন জানানো হয়। কিন্তু বন বিভাগ সেই অনুমতি না দিয়ে পরিবর্তে চেয়ে বসে ১৪ হেক্টর বনভূমির ক্ষতিপূরণ। প্রশাসনের পক্ষে সেই শর্ত পূরণ সম্ভব হয়নি। ফলে তারা নেয় এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত। গাছগুলো রেখে তাদের চারপাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে ফেলে!
গাছগুলোও আবার সোজা লাইনে রোপণ করা নয়। কোনোটি বাঁয়ে, কোনোটি ডানে, আবার কোনোটি একেবারে মাঝখানে। অর্থাৎ, শুধু এক পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি গাছ যেন একেকটি মৃত্যুফাঁদ।
স্থানীয় এক পথচারী বলেন, এরই মধ্যে এখানে একাধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ অপসারণে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিদে দেখা যায়নি। বড় ধরনের দুর্ঘটনায় কেউ প্রাণ হারালে দায়ভার কে নেবে- এই প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।
সূত্র: এনডিটিভি
Advertisement
এসএএইচ