জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেটের ৪২তম অধিবেশনে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৩২৩ কোটি ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার মূল বাজেট পাস হয়েছে। এতে বেতন-ভাতা ও পেনশন-অবসর সুবিধা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট বাজেটের ৬৮.২৩ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ শতকরা হিসেবে কমিয়ে ০.১৪ শতাংশ করা হয়েছে। যা আগে ছিল ০.১৫ শতাংশ।
Advertisement
শনিবার (২৮ জুন) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে অনুষ্ঠিত ৪২তম বার্ষিক অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব উপস্থাপিত বাজেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেট ও ২০২৫ সালের প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেতন-ভাতা বাবদ সর্বোচ্চ ব্যয় রাখা হয়েছে। এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ১৮১ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এটি মোট বাজেটের ৫৬.২৪ শতাংশ। চলতি অর্থ বছরের মূল বাজেটে বরাদ্দ ছিল ১৮৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা যা মোট বাজেটের প্রায় ৬০ শতাংশ।
বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে সেবা খাতে, ৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ খাতে মোট বাজেটের ২৩.৩১ শতাংশ খরচ হবে। চলতি অর্থবছরে মূল বরাদ্দ ছিল ৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। যা বাজেটের ২২.৬০ শতাংশ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যয় ধরা হয়েছে পেনশন ও অবসর সুবিধা খাতে। এতে বরাদ্দ রয়েছে ৩৮ কোটি ৭৭ লাখ যা মোট বরাদ্দের ১১.৯৯ শতাংশ। চলতি বছর এ খাতে ৩১ কোটি ৯০ লাখ টাকা অর্থাৎ ১০.০২ শতাংশ বরাদ্দ ছিল।
Advertisement
গবেষণা ও উদ্ভাবন খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ রয়েছে ৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা যা মোট বরাদ্দের ২.৮৫ শতাংশ। চলতি বছর এটি ছিল ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা, যেটি মোট বরাদ্দের ২.২৬ শতাংশ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা খাতে এ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫ লাখ টাকায় যা মোট বরাদ্দের ০.১৪ শতাংশ। এটি এ বছর ৪৫ লাখ টাকা ছিল। তবে সেটি ছিল বাজেচের ০.১৫ শতাংশ। যানবাহন ক্রয় বাবদ প্রস্তাবিত বাজেটে মোট বাজেটের ০.৭১ শতাংশ অর্থাৎ ২ কোটি ২৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের আয়ের খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বা সরকারি মঞ্জুরি ২৭৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, ছাত্রছাত্রীদের নিকট হতে প্রাপ্ত ফিস বাবদ ৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ভর্তি ফর্ম বিক্রি থেকে আয় ২৩ কোটি ৪৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন চার্জ থেকে ৩ কোটি ৭১ লাখ ২১ হাজার টাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি থেকে আয় ৩৩ লাখ টাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য উৎস হতে আয় ১০ কোটি ১৫ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। ইউজিসির বরাদ্দ বাদে সব মিলিয়ে মোট নিজস্ব আয় ৪৪ কোটি টাকা।
বাজেট উপস্থাপনকালে কোষাধ্যক্ষ জানান, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজস্ব তহবিলে ঘাটতির পরিমাণ ৮০ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) আনুমানিক ঘাটতির পরিমাণ ২০ কোটি টাকা হওয়ায় বছর শেষে ক্রমপুঞ্জিত ঘাটতি বাজেটের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
বাজেট ঘাটতির কারণ হিসেবে কোষাধ্যক্ষ উল্লেখ করেন, সরকারি বিধিবহির্ভূতভাবে কিছু কিছু খাতে যেমন- জাবি স্কুল ও কলেজের ব্যয়, গবেষণা ভাতা, নৈশ ভাতা, গার্ড বোনাস, স্বাস্থ্য বীমা/গোষ্ঠী বীমা খাতের ভর্তুকি, ডাইনিং হল অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন ইত্যাদি খাতসমূহে ব্যয় করাই বাজেট ঘাটতির প্রধান কারণ। এসব খাতে চলতি অর্থবছর ও আগামী অর্থবছরের জন্য ইউজিসি হতে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।
Advertisement
সৈকত ইসলাম/এমএন/জিকেএস