বিনা পারিশ্রমিকে ৪৯ বছর ৩ হাজার ৫৭টি কবর খুড়েছিলেন মনু মিয়া। কিশোরগঞ্জের ইটনার এই ব্যক্তির মৃত্যুতে শোকাহত সেখানকার মানুষ। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ছিল তার দাফন। একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান বাতিল করে মনু মিয়ার জানাজায় ছুটে গিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন অভিনেতা খায়রুল বাসার।
Advertisement
আজ (২৮ জুন) শনিবার ছিল একটি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান। সেখানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল অভিনেতা খায়রুল বাসারের। কিন্তু মনু মিয়ার মৃত্যুসংবাদ শোনার পর পরিকল্পনা বদলে তিনি ছুটে যান কিশোরগঞ্জে। সন্ধ্যায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মনু কাকা আমার আত্মীয় না হলেও তার জীবনদর্শন আমাকে নাড়া দিয়েছে। কয়েক দিন আগে কথা হয়েছিল তার সঙ্গে। আমাকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আজ এলাম, কিন্তু তাকে পেলাম না। তার ঘর, তার তৈরি সরঞ্জাম দেখে মুগ্ধ হয়েছি। ঠিক যেমন বলেছিলেন, তেমন করেই সাজানো। তাকে না দেখলেও দেখলাম একজন সৎ, সহজ ও আলোকিত মানুষের স্মৃতিচিহ্ন।’
অ্যাওয়ার্ড শো প্রসঙ্গে খায়রুল বাসার বলেন, ‘পুরস্কার জীবনে আরও পাওয়া যাবে। কিন্তু এই মানুষটিকে শেষ বিদায় দিতে না গেলে সেই আফসোস সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হতো। তাই আমি মনে করেছি তার জানাজায় উপস্থিত হওয়াটাই জরুরি।’
এর আগে মনু মিয়া অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে, সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে তার মানবিক জীবনের গল্প। সেসময় কে বা কারা তার একমাত্র সঙ্গী ঘোড়াটি মেরে ফেলে। অভিনেতা খায়রুল বাসার তখন তাকে একটি নতুন ঘোড়া উপহার দিতে চাইলে তা নিতে রাজি হননি মনু মিয়া।
Advertisement
মনু মিয়ার জীবনদর্শনে মুগ্ধ খায়রুল বাসার তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘আজ একজন নায়কের সাথে দেখা হলো আমার। আমি নিজ চোখে একজন নায়ককে দেখে এলাম। বুক মেলালাম তার সাথে! আজন্ম এক নায়ক মনু মিয়া। মনু চাচা দোয়া ছাড়া কিছু চান না আপনাদের কাছে। তিনিও আপনাদের জন্য দোয়া করেন, যেন সবাই ভালো থাকেন।’
খায়রুল বাসার কাজ করছেন নতুন সিনেমা ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’-এ। পল্লিকবি জসীমউদ্দীনের কাব্যগ্রন্থ অবলম্বনে সিনেমাটি তৈরি করছেন নন্দিত নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল। সিনেমায় সোজন চরিত্রে অভিনয় করবেন খায়রুল বাসার।
আরএমডি
Advertisement