সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের প্রায় ৫০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) বিকেলে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দুটি মামলায় ৫০ জনকে আসামি করা হবে। তবে ২৪ জনের নাম থাকবে দুই মামলাতেই।
প্রথম মামলায় যাদের আসামি করা হবে তারা হলেন, সাদ মুসা গ্রুপের কর্ণধার ও সাবেক পরিচালক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড; ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের মোহাম্মদ মোহসিন, তার স্ত্রী ও মাহমুদ সাজিদ কটন মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান শামীমা নারগিস চৌধুরী, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী; সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার, সাবেক পরিচালক বেলাল আহমেদ, সাবেক পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ, সাবেক পরিচালক ড. মোহাম্মদ ফারুক, সাবেক পরিচালক আরিফ আহমেদ, সাবেক পরিচালক ওসমান গণি, সাবেক পরিচালক মিসেস মায়মুনা খানম, সাবেক পরিচালক মিসেস সরোয়ার জাহান মালেক, সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ আদিল, সাবেক পরিচালক মিসেস শাহানা ফেরদৌস, সাবেক পরিচালক সাজেদা নূর বেগম, সাবেক পরিচালক বোরহানুল হাসান চৌধুরী, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক মোহাম্মদ কুতুবউদ্দৌলা, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক এস এ এম সলিমউল্লাহ।
Advertisement
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের (আগের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেড) প্রধান কার্যালয়ের ঋণ বিভাগের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারওয়ার, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) ও ঋণ বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ মাহমুদ আলম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মশিউর রহমান জাহেদ, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ শাখার সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসএভিপি) ও ব্যবস্থাপক মো: শামসুল আলম, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) ও ব্যবস্থাপক (অপারেশন) মুন্নশ্রী চক্রবর্তী, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার হাসান আলী, জুনিয়র অফিসার রিফাত ইফতেখারুল আলম ও ঋণ বিভাগের জুনিয়র অফিসার মিজানুর রহমান।
এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে পরস্পর যোগসাজসে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ আনা হচ্ছে।
কমিশন বলছে, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাহকের পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই, গ্রাহকের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও গুদাম সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়নি। ঋণ আবেদনের মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ঋণগ্রহীতার অন্যান্য ঋণ সমন্বয় এবং ঋণগ্রহীতার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৯৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এ অভিযোগে এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা করা হবে।
Advertisement
অন্য মামলায় মোহাম্মদ মোহসিন, শামীমা নারগিস চৌধুরী, নিজাম চৌধুরী, প্রশান্ত কুমার হালদার, বেলাল আহমেদ, গোলাম মোহাম্মদ, ডক্টর মোহাম্মদ ফারুক, আরিফ আহমেদ, ওসমান গণি, মিসেস সরোয়ার জাহান মালেক, মোহাম্মদ মোস্তান বিল্লাহ আদিল, মিসেস শাহানা ফেরদৌস, সাজেদা নূর বেগম, বোরহানুল হাসান চৌধুরী, মোহাম্মদ কুতুবউদ্দৌলা, এস এ এম সলিমউল্লাহ, গোলাম সারওয়ার, মোহাম্মদ মাহমুদ আলম, কাজী মশিউর রহমান জাহেদ, শামসুল আলম, মুন্নশ্রী চক্রবর্তী, হাসান আলী, রিফাত ইফতেখারুল আলম ছাড়াও জুনিয়র অফিসার নিগার সুলতানাকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায়ও আসামিদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ আনা হচ্ছে। তারা ৩৫ কোটি টাকা অনুমোদন করলেও সে অর্থ প্রকৃত উদ্দেশে ব্যবহার হয়নি। বরং স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে ২৯ কোটি ১৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও একই আইনে মামলা করা হবে।
পি কে হালদারকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে কোনো অগ্রগতির আছে কি না, জানতে চাইলে দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, এ প্রক্রিয়াটা একটু জটিল, তারপরও তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে।
তিনি বলেন, দুদকসহ আমাদের অন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোও তাকে ফেরানোর বিষয়ে চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে কোনো সাফল্য এলে অবশ্যই জানানো হবে।
দুদকের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আসামি প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত ভারতের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি রয়েছে। যতদূর জেনেছি সে কারণেই পি কে হালদার বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। আমাদের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
এসএম/এমকেআর/জিকেএস