নীতিমালা না মেনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সচিব পদমর্যাদার ১২ জন কর্মকর্তাকে ঢাকার ধানমন্ডি এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
বুধবার (৯ জুলাই) দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহে দুদকের এনফোর্সমেন্ট দল অভিযান চালায়। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এসব কর্মকর্তাকে নীতিমালা ভেঙে ঢাকার ধানমন্ডিতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগের ‘সত্যতা পাওয়ার’ কথা জানায় দুদক।
আকতারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক আল-আমিনকে প্রধান করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করেছে। দলের অন্য সদস্য হলেন উপসহকারী পরিচালক নাহিদ ইমরান।
Advertisement
অভিযোগ রয়েছে, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘রাতের ভোট’ কাণ্ডে ভূমিকা রাখার ‘পুরস্কার’ হিসেবে সাবেক এই কর্মকর্তাদের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বরাদ্দ পাওয়াদের তালিকায় রয়েছেন- দুদকের সাবেক কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মো. জহুরুল হক (ফ্ল্যাটের আয়তন ৪১০৫.০৫ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান (ফ্ল্যাটের আয়তন ২৩১৫.৮৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান (ফ্ল্যাটের আয়তন ৪৩০৮.৬৮ বর্গফুট), সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার (ফ্ল্যাটের আয়তন ২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব এম আসলাম আলম (ফ্ল্যাটের আয়তন ২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ (ফ্ল্যাটের আয়তন ২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সচিব মো. সিরাজুল হক খান (ফ্ল্যাটের আয়তন ২৩১৫.৮৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ (ফ্ল্যাটের আয়তন ২৩১৫.৮৩ বর্গফুট), সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সাবেক সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম (ফ্ল্যাটের আয়তন ২০৪৯.১৩ বর্গফুট), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ (ফ্ল্যাটের আয়তন ২০৪৯.১৩ বর্গফুট), সাবেক সিনিয়র সচিব ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান (ফ্ল্যাটের আয়তন ২৩১৫.৮৩ বর্গফুট) এবং সাবেক সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক (ফ্ল্যাটের আয়তন ২০৪৯.১৩ বর্গফুট)।
দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত’ সচিব পদমর্যাদার ১২ কর্মকর্তাকে ‘পুরস্কৃত করতে’ শেখ হাসিনার আমলে পরিকল্পিতভাবে ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। গত ৫ মে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল ওই বিষয়ে খবর সম্প্রচার করে। সেটি আমলে নিয়ে দুদক অভিযানে নামে।
সম্প্রতি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১২টি ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিল করেছে। সাবেক এই ১২ কর্মকর্তাকে ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ‘গৃহায়ন ধানমন্ডি (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্পে।
Advertisement
ধানমন্ডির ১৩ নম্বর (নতুন ৬/এ) সড়কের ৭১১ নম্বর (নতুন ৬৩) বাড়ি নিয়ে প্রকল্পটি। সেখানে ১৮টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১২টি (৬০ শতাংশ) রাখা হয়েছিল সরকারি কোটা অনুযায়ী, যা এই ১২ কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়।
এসএম/ইএ