অর্থনীতি

জ্বালানি মজুত সক্ষমতা না বাড়ালে ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ

জ্বালানি মজুত সক্ষমতা না বাড়ালে ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ

• জ্বালানি তেলের মজুত অবকাঠামো বাড়ানোয় নজর নেই সরকারের• বর্তমান ডিপোগুলোতে নতুন ট্যাংক বসানোর সুযোগ কম• অন্তত ৯০ দিনের জ্বালানি তেল মজুত রাখা উচিত• স্টোরেজ স্বল্পতায় জ্বালানি আমদানির জাহাজ বসিয়ে রাখতে হয়

Advertisement

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের একপর্যায়ে হরমুজ প্রণালি বন্ধের হুমকি দেয় ইরান। তেল সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে বড় ভূমিকা রাখা এ প্রণালি বন্ধের হুমকিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। আলোচনায় আসে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টিও।

বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) জ্বালানি তেলের কৌশলগত মজুত সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে ভাবনা তৈরি করেছে এ বৈশ্বিক সংকট। বর্তমানে বিপিসির স্টোরেজ সক্ষমতা রয়েছে তাতে সাকুল্যে দুই মাসের জ্বালানির জোগান হতে পারে। যুদ্ধ কিংবা বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘ মেয়াদে আমদানির সুযোগ না থাকলেও বিপদের কারণ হতে পারে জ্বালানি সংকট।

আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থাগুলোর প্রমিত মান অনুযায়ী, আমদানিনির্ভর দেশগুলোর আপদকালীন ব্যবহারের জন্য স্বাভাবিক অবস্থায়ও অন্তত ৯০ দিনের জ্বালানি তেল মজুত রাখা উচিত। বিপিসির ২৩ জুনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান মজুতে ডিজেল ২৭ দিন, অকটেন ৭ দিন, পেট্রোল ৮ দিন, ফার্নেস ও জেট ফুয়েল ২৮ দিন চলতে পারবে।

Advertisement

জ্বালানির চাহিদা ও বিপিসির মজুত সক্ষমতা

বাংলাদেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ৭২ লাখ টন জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ৯২ শতাংশ আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয় সরকারি প্রতিষ্ঠান বিপিসিকে। এ চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এর মধ্যে বিপিসির জ্বালানি মজুত সক্ষমতা সাকুল্যে ১৬ লাখ টনের কাছাকাছি। আমদানিনির্ভর হলেও জ্বালানি তেলের এ মজুত সক্ষমতা একেবারে নগণ্য। তাছাড়া স্টোরেজ স্বল্পতার কারণে অনেক সময় আমদানি করা জ্বালানি নিয়ে আসা জাহাজকে বসিয়ে রেখে জরিমানা গুনতে হয় বিপিসিকে।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল ১১ লাখ টনের। এখন সেই চাহিদা ৭০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের মজুত অবকাঠামো বাড়ছে না। এতে সংকটকালীন মুহূর্তে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে।- জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এম শামসুল আলম

গত পাঁচ বছরের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, কখনো স্থিতিশীল ছিল না কিংবা ক্রমান্বয়ে বাড়েনি বিপিসির মজুত সক্ষমতা। ২০১৯ সালের ১ জুলাই বিপিসির জ্বালানি পণ্যের মজুত সক্ষমতা ছিল ১৩ লাখ ২০ হাজার ২৯০ টন। পরের বছর ২০২০ সালের ১ জুলাই মজুত সক্ষমতা কমে দাঁড়ায় ১৩ লাখ ৩ হাজার ৫০৫ টনে। ২০২১ সালের একই সময়ে ধারণক্ষমতা উন্নীত হয় ১৩ লাখ ৮ হাজার ৮৪৭ টনে। ২০২৪ সালের ১ জুলাই বিপিসির মজুত সক্ষমতা দাঁড়ায় ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৩০ টনে।

এদিকে অন্য পেট্রোলিয়াম জ্বালানির মজুত সক্ষমতা বাড়লেও পাঁচ বছরে ডিজেল মজুতের অবকাঠামোগত সক্ষমতা কমে ২৩ হাজার ৭২৯ টন। ২০১৯ সালের ১ জুলাই যেখানে ডিজেলের মজুত সক্ষমতা ছিল ৬ লাখ ২৭ হাজার ৭৯২ টন, সেখানে পাঁচ বছর পরে এসে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪ হাজার ৬৩ টনে।

Advertisement

পরবর্তীসময়ে বিপিসি গঠিত নতুন পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানির নতুন চার প্রকল্পে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৮শ টন ধারণক্ষমতার নতুন ট্যাংক ফার্ম নির্মাণ করা হয়। এতে ডিজেলসহ অন্য পণ্যগুলোর কৌশলগত মজুত সক্ষমতা বেড়ে ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩০ টনে দাঁড়ায়।

জ্বালানি তেলের মজুত অবকাঠামো বাড়ানোর দিকে সরকারের নজর নেই। কারণ সরকারি মজুত সক্ষমতা বাড়লে সরকারি কর্মকর্তাদের কোনো লাভ নেই। তারা (কর্মকর্তারা) চাইছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ট্যাংক ফার্ম ভাড়া নিতে।-এম শামসুল আলম

২০১৮-১৯ অর্থবছরে জ্বালানি বিক্রি হয় ৬৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৯৭ মেট্রিক টন। বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালে জ্বালানি তেলের সম্ভাব্য চাহিদা দাঁড়াবে ৯১ লাখ টনে।

আরও পড়ুনসাগর থেকে ডাঙায় ধাপে ধাপে জ্বালানি তেল চুরি‘আলেজ’ সংকটে দেড় লাখ ডলার ক্ষতির মুখে বিপিসিচট্টগ্রামে বিপিসির প্রধান কার্যালয় ‘নামকাওয়াস্তে’

বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার ডিপোগুলোতে নতুন করে ট্যাংক বসানোর সুযোগ কম। অভিযোগ উঠেছে, প্রভাবশালী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সুযোগ করে দিতেই বাড়ানো হচ্ছে না জ্বালানি তেলের সরকারি মজুত সক্ষমতা। ভাড়া করা ট্যাংকে জ্বালানি মজুত করা গেলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে, এতে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবেন।

পারস্য উপসাগরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হরমুজ প্রণালি। এটি মধ্যপ্রাচ্যের ওমান, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পাশ দিয়ে প্রবাহিত। সংকীর্ণ প্রণালিটি দিয়ে বিশ্বের জ্বালানি তেল বাণিজ্যের ২৫ শতাংশ পরিবাহিত হয়। সিঙ্গাপুর হয়ে এলেও বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের বেশিরভাগ অংশ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে আমদানি করা হয়। ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে হরমুজ প্রণালি নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিয়ে মাথাব্যথা তৈরি হয় সরকারের।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে দেশে ৬৭ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন পেট্রোলিয়াম জ্বালানি সরবরাহ করে বিপিসি। ওই অর্থবছরে ডিজেল ব্যবহৃত হয়েছে ৪২ লাখ ৫৪ হাজার ৮৭৯ টন, যা ব্যবহৃত জ্বালানির প্রায় ৬৩ শতাংশ। চলতি (২০২৪-২০২৫) অর্থবছর জ্বালানি তেলের প্রাক্কলিত চাহিদা রয়েছে ৭৪ লাখ টন।

বিপিসিতে নতুন ট্যাংক ফার্ম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে এমআইগুলোতে (প্রধান স্থাপনা) স্টোরেজ ক্যাপাসিটি কম। স্টোরেজ স্বল্পতার কারণে অনেক সময় আমদানি করা জ্বালানি নিয়ে আসা জাহাজকে বসিয়ে রাখতে হয়। এজন্য জরিমানা গুনতে হয় বিপিসিকে।- বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) মণি লাল দাশ

বিপিসির তথ্যমতে, বিপিসি নিয়ন্ত্রণাধীন আটটি প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল), পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এসএওসিএল), এলপি গ্যাস লিমিটেড (এলপিজিএল), ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ব্লেন্ডার্স পিএলসি (ইএলবিএল) এবং পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি-পিএলসির (পিটিসিপিএলসি) মাধ্যমে জ্বালানি আমদানি, পরিশোধন, সঞ্চালন, সরবরাহ ও বিপণন করে। বর্তমানে প্রধান স্থাপনাসহ সারাদেশে ২৭টি স্থানে ডিপো রয়েছে বিপিসির। এতে সবমিলিয়ে স্টোরেজ সক্ষমতা ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৩৩০ টন।

এর মধ্যে ইআরএলে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৮০ টন, পদ্মা অয়েলে ৩ লাখ ৪ হাজার ৪৭০ টন, মেঘনা পেট্রোলিয়ামে ২ লাখ ৩৪ হাজার ২৬৬ টন, যমুনা অয়েলে ২ লাখ ২২ হাজার ৫৩ টন, এসএওসিএলে ৫৪ হাজার ৭৫৭ টন, এলপিজিএলে ৫৪০ টন, ইএলবিএলে ৯ হাজার ৪৬৪ টন এবং জ্বালানি সঞ্চালনকারী প্রতিষ্ঠান পিটিসিপিএলসিতে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৮শ টনের জ্বালানি মজুত সক্ষমতা রয়েছে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এম শামসুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা ছিল ১১ লাখ টনের। এখন সেই চাহিদা ৭০ লাখ টন ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের মজুত অবকাঠামো বাড়ছে না। এতে সংকটকালীন মুহূর্তে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকিতে পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মজুত অবকাঠামো বাড়ানোর দিকে সরকারের নজর নেই। কারণ সরকারি মজুত সক্ষমতা বাড়লে সরকারি কর্মকর্তাদের কোনো লাভ নেই। তারা (কর্মকর্তারা) চাইছেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ট্যাংক ফার্ম ভাড়া নিতে। সরকার চাইলে রাতারাতি ট্যাংক নির্মাণ করতে পারবে না, কিন্তু বেসরকারি গ্রুপগুলো চাইলে রাতারাতি ট্যাংক নির্মাণ করতে পারবে। এটা সরকারি কর্মকর্তারা জানেন।’

এই জ্বালানি বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘তারাও চাইছেন, দেশে এমন পরিস্থিতি তৈরি হোক যখন ব্যবসায়ী ও সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে দাবি উঠবে- বেসরকারি পর্যায়ে জ্বালানি মজুতের ট্যাংক ভাড়া নেওয়ার। তখন সরকার জরুরি বিবেচনায় ওই দাবি মেনে নেবে। তখন হয়তো লিটারপ্রতি ৫ টাকা ১০ টাকা ভাড়া গুনতে হবে সরকারকে। এতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার সুযোগ হবে। তাতে জনগণের স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবেন।’

বিপিসির তথ্য অনুযায়ী, চলতি জুন মাসের প্রথম ২৩ দিনে (১ জুন থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত) দৈনিক গড়ে ডিজেল বিক্রি হয়েছে ১১ হাজার ৩৪৭ টন। সে অনুযায়ী দুই মাস বা ৬০ দিনে ৬ লাখ ৮০ হাজার ৮২০ টন ডিজেলের প্রয়োজন। কিন্তু বর্তমানে সারাদেশে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডসহ (ইআরএল) বিপিসির অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান স্থাপনা ও ডিপোগুলোতে সাকুল্যে ৭ লাখ ২৫ হাজার ৮৬৩ টন ডিজেলের মজুত সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে ডেড স্টক (অব্যবহৃত মজুত) হিসেবে ১০ শতাংশ বাদ দিলে কার্যত বিপিসির ডিজেল মজুত সক্ষমতা রয়েছে ৬ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ টন। বর্তমান বিক্রির হিসাবে এই পরিমাণ ডিজেল দিয়ে ৫৮ দিনের কম সময় চালানো যাবে।

একইভাবে চলতি মাসের ২৩ জুন পর্যন্ত দৈনিক গড়ে অকটেন বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৩৩১ টন। এতে ৬০ দিনের প্রয়োজনীয় অকটেন মজুত করতে ৭৯ হাজার ৮৬০ টনের স্টোরেজ ট্যাংকের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে বিপিসির কাছে ৫৬ হাজার ৪১৮ টনের স্টোরেজ সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে ডেড স্টক হিসেবে ১০ শতাংশ বাদে কার্যত অকটেনের স্টোরেজ সক্ষমতা ৫০ হাজার ৭৭৬ টনের। বর্তমান হিসাবে এই পরিমাণ অকটেন ৩৮ দিন ব্যবহার করা যাবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপিসির এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ডিপোগুলো পুরোনো। ডিপোগুলোতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে নতুন করে ট্যাংক ফার্ম নির্মাণের সুযোগ নেই। আবার বিপিসি বর্তমানে যে মজুত দেখাচ্ছে, সেটিও সত্যিকারের চিত্র নয়। ট্যাংকের তলায় থাকা ডেড স্টক ব্যবহার করার সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বিপিসি পরিচালনা করেন আমলারা। কোনো এক কর্মকর্তা পদায়িত হয়ে এসে বিপিসির কার্যক্রম বুঝতে বুঝতে আবার অন্য মন্ত্রণালয়ে বদলি হয়ে যান। এতে বিপিসি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের বিপিসির অপারেশনাল ও মার্কেটিং কাজে অভিজ্ঞ বর্তমান এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষ কমিটি করে পরামর্শ নেওয়া। যাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুন জায়গা কিনে নতুন ট্যাংক ফার্ম তৈরির কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।’

বিপিসির মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য ও অপারেশন্স) মণি লাল দাশ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিপিসির অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ১৩ লাখ ২৫ হাজার টন জ্বালানি তেলের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি রয়েছে। পাশাপাশি বিপিসির নতুন প্রতিষ্ঠান পিটিসিপিএলসির প্রকল্পগুলোতে দুই লাখ ৫৮ হাজার টনের ট্যাংক ফার্ম আছে। ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্প চালু হওয়ায় তাদের ট্যাংকগুলোও মজুতে যুক্ত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য ও অপারেশন্স বিভাগে যোগদান করার পর থেকে বিপিসিতে নতুন ট্যাংক ফার্ম নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে এমআইগুলোতে (প্রধান স্থাপনা) স্টোরেজ ক্যাপাসিটি কম। স্টোরেজ স্বল্পতার কারণে অনেক সময় আমদানি করা জ্বালানি নিয়ে আসা জাহাজকে বসিয়ে রাখতে হয়। এজন্য জরিমানা গুনতে হয় বিপিসিকে।’

প্রধান স্থাপনায় নতুন করে ট্যাংক ফার্ম নির্মাণ করা হচ্ছে জানিয়ে মণি লাল দাশ বলেন, ‘পতেঙ্গায় পদ্মা অয়েলে দুটি নতুন ট্যাংক নির্মাণের টেন্ডার হয়েছে। যমুনা অয়েল ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামেও দুটি করে ট্যাংক নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৮০ হাজার টনের নতুন ট্যাংক ফার্ম তৈরি হবে। নতুন নতুন ট্যাংক ফার্ম তৈরির জন্য কোম্পানিগুলোকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।’

এমডিআএইচ/এএসএ/এমএফএ/জেআইএম