সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে ঋণ কেলেঙ্কারি ও শেয়ারবাজারে কারসাজির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে প্রধান উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে।
Advertisement
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ২০ বছর সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন আলমগীর কবির। এই সময়কালে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম উপেক্ষা করে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং অর্থপাচারের মাধ্যমে ব্যাংকটিকে আর্থিক সংকটে ফেলেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, তিনি নিজের প্রভাব খাটিয়ে পরিবার-ঘনিষ্ঠ ও অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে নামে-বেনামে ঋণ দিয়েছেন, চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করেছেন এবং ব্যাংকের সম্পদ ব্যবহারে সরাসরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। ব্যাংকের বিভিন্ন প্রকল্প ও ক্রয় কার্যক্রমেও তার একক নিয়ন্ত্রণ ছিল। এসব কর্মকাণ্ডের ফলে ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে, যার বড় অংশ পাচার হয়ে গেছে বিদেশে—কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায়। দেশে গুলশান, বসুন্ধরা, বাংলামোটরসহ বিভিন্ন এলাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট এবং গাজীপুর ও কাঁচপুরে বিশাল পরিমাণ জমি রয়েছে তার মালিকানায়।
তার ছেলে রাইহান কবির ব্যাংকের পরিচালক থাকাকালে ‘বাপ-বেটা’ মিলে ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বে লিজিং এবং এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের বিপুল শেয়ার ক্রয় করেন। ব্যাংকের অর্থ দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তার করেন এবং পরিচালকের পাশাপাশি উপদেষ্টা পদও গ্রহণ করেন। এমনকি তার নিজস্ব দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে মোটা অঙ্কের ঋণও অনুমোদন করিয়েছেন।
Advertisement
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ-৪-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বে লিজিংয়ের বর্তমান আর্থিক অবস্থায় ঋণ পরিশোধ সম্ভব নয় এবং ব্যাংক কোম্পানি আইন লঙ্ঘন করে এ ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের চাপে আলমগীর কবির ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে চেয়ারম্যান পদ ছাড়তে বাধ্য হলেও এখনো তিনি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
ইএআর/এমআইএইচএস/জেআইএম
Advertisement