খেলাধুলা

কেন স্ট্রাইকারের ঘাটতি, চিন্তা করতে হবে বাফুফে ও ক্লাবগুলোকে

কেন স্ট্রাইকারের ঘাটতি, চিন্তা করতে হবে বাফুফে ও ক্লাবগুলোকে

বাংলাদেশের ফুটবলের বড় দুঃখ স্ট্রাইকারের ঘাটতি। দক্ষ স্ট্রাইকার না থাকায় প্রতিপক্ষকে বাগে পেয়েও জয় না পাওয়ার উদাহরণ আছে ভুরিভুরি। ভারত ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের প্রথম দুই ম্যাচ এই দুঃখের সর্বশেষ উদাহরণ।

Advertisement

সাবেক তারকা ফুটবলার ইমতিয়াজ সুলতান জনি মনে করেন, দেশের ফুটবলে যে স্ট্রাইকার ঘাটতি তা নিয়ে ভাবতে হবে। এখানে ক্লাবগুলোর বড় ভূমিকা রাখা উচিত।

ভারত, ভুটান ও সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন ম্যাচে বাংলাদেশ কেমন খেললো তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাইলেন না সাবেক এই ফুটবলার। তার মতে, বাংলাদেশ এখন নতুন ফরম্যাটে খেলছে। বিদেশের লিগে খেলা কিছু ফুটবলার যুক্ত হয়েছেন। বিশেষ করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা দেওয়ান চৌধুরীর অন্তর্ভূক্তি বড় প্রভাব ফেলেছে।

তাই বলে একজন হামজাই যে সবকিছু না এবং সবাই হামজা নন- সেটাও উল্লেখ করেছেন ইমতিয়াজ সুলতান জনি। ‘প্রবাসী ফুটবলার যোগ করলেও আমাদের স্থানীয়দের প্রাধান্য দিতে হবে। একটা ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। এই যেমন, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ ভালো ম্যাচ খেলেছে বলেই তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। মাঝে ভুটানের বিপক্ষে একটা ম্যাচও খেলেছে বাংলাদেশ। আসলে রেজাল্ট পেতে হলে টিমকেই খেলতে হবে। এখানে একটা বিষয় বলা প্রয়োজন, স্থানীয় ও প্রবাসীদের মধ্যে যেন কোনো পার্থক্য তৈরি না হয়। তাদের মধ্যে ম্যাচিং থাকতে হবে। ম্যাচিং করানোও কঠিন। এখানে টিম ম্যানেজমেন্টের ভূমিকা আছে’- বলেছেন জনি।

Advertisement

বলছিলেন দেশের ফুটবলে স্ট্রাইকার ঘাটতি আছে এবং তা নিয়ে ভাবতে হবে। কিভাবে সেটা করা সম্ভব বলে মনে করেন? ইমতিয়াজ সুলতান জনি বলেন, ‘জাতীয় দলের এই যে স্ট্রাইকার সমস্যা, তা শুরু ঘরোয়া ফুটবল থেকেই। দেশের শীর্ষ লিগের ক্লাবগুলো স্ট্রাইকিং পজিশনে বিদেশি খেলিয়ে থাকে। যে কারণে জাতীয় দলে এই পজিশনের খেলোয়াড় পেতে সংকটে পড়তে হয়। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলোর উচিত এটা নিয়ে ভাবার। তারা যদি স্থানীয় খেলোয়াড়দের ওপর ভরসা করে সেটা ভালো।’

‘তবে সব ক্লাবই চায় ম্যাচ জিততে এবং সেখানে তারা নিজেদের সেরা অপশনই ব্যবহার করে। এখানে কারো কিছু করার থাকে না। তবে বিকল্প চিন্তাভাবনা করতে হবে। আসলে আমরা পেশাদার ফুটবল নামে খেলি। আমি মনে করি, দেশের ফুটবল পুরোপুরি পেশাদারিত্বে পৌঁছালে এটা কাভার করবে। বাফুফেরও এ বিষয়ে সহযোগিতার সুযোগ আছে। কারণ, আমাদের দেশের সব ক্লাবের পুরোপুরি পেশাদারিত্বের সক্ষমতা নেই।’

অনেকে বলেন, শিলংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতকে যেমন নার্ভাস দেখা গেছে তেমনটি নিকট অতীতে দেখা যায়নি। এ বিষয়ে একমত নন ইমতিয়াজ সুলতান জনি। তিনি মনে করেন, 'তাতে খুশি হওয়ার কিছু নেই। ভারত একটি ম্যাচ খারাপ করতেই পারে। হামজার উপস্থিতিই দৃশ্যপট বদলে দিয়েছিল। তার মতো একজন ফুটবলার দলে অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় অন্যরা উজ্জীবিত হয়েছেন। তাই টিমও ভালো খেলেছে। এখানে ভারতকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। ওই ম্যাচ আমরা ড্র করেছি। আবার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে যে হেরেছি ঘরের মাঠে, এটাতো বিশাল লস টুর্নামেন্টে টিকে থাকার জন্য।’

সাম্প্রতিক সময়ের তিন ম্যাচ নিয়ে দেশের ফুটবলে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, সেটাকে ধরে রাখতে ঘরোয়া ফুটবলের ম্যাচ ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আনতে হবে বলে মনে করছেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার, ‘বলা হয় ফুটবল দেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে ঢাকায় কেন লিগের খেলা হয় না? আমি মনে করি, লিগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজন করা উচিত। এমন কি টুর্নামেন্টগুলোর ফাইনালও। এখন যদি ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে ঘরোয়া ফুটবলে ভালো ম্যাচগুলো হয় তাহলে দর্শকে গ্যালারি ভরে যাবে। কারণ, ফুটবলের ওপর মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।’

Advertisement

বাফুফের প্রফেশনাল লিগ কমিটি নতুন মৌসুমে সার্কভূক্ত ৫ দেশ থেকে ৫ জন ফুটবলারকে বাংলাদেশী খেলোয়াড় হিসেবে খেলানোর নিয়ম চালু করেছে তাকে সঠিক সিদ্ধান্ত মনে করছেন না এই তারকা ফুটবলার ‘হঠাৎ করে এমন নিয়ম চালুর কোনো মানেই হয় না। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ক্লাবগুলোর সাথে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। এমন কেন করা হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।’

আরআই/আইএইচএচ/