ভ্রমণ

লক্ষ্মীপুর জেলায় ভ্রমণের সেরা ১০ স্থান

লক্ষ্মীপুর জেলায় ভ্রমণের সেরা ১০ স্থান

কামরুল হাসান হৃদয়

Advertisement

প্রকৃতির কোলে সময় কাটালে সব সময়ই মন প্রশান্ত হয়। লক্ষ্মীপুর জেলা সেই প্রেক্ষাপটে অপরূপ গন্তব্য। যেখানে নদী, চর, দিঘি আর পার্কের মিলনে পাওয়া যায় ঘুরে বেড়ানোর অপার আনন্দ। যারা দূর জেলা থেকে আসছেন; তাদের থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থাও আছে শহরের কাছাকাছি এলাকায়।

মেঘনার বুকে ভাসমান ছোট্ট চর চর আব্দুল্লাহ। নদী আর সবুজের মেলবন্ধনে পূর্ণ জায়গাটি সূর্যাস্তের সময় হয়ে ওঠে রঙিন, অপূর্ব এক সৌন্দর্যগাথা। স্থানীয় খাবারের হোটেল আছে এখানে। এখানে যেতে হলে ঝুমুর বা দক্ষিণ তেমুহনি থেকে বাস বা সিএনজিতে আলেকজান্ডার মেঘনা বিচ যেতে হয়। সেখান থেকে নদীর পাড়ে নৌকা বা স্পিড বোটে চরে চর আব্দুল্লাহ পৌঁছানো যায়।

আলেকজান্ডার মেঘনা বিচ পরিবার বা বন্ধুদের নিয়ে পিকনিক করার জন্য উপযোগী। নদীর ধারে সাদা বালুকার প্রান্তরে বসে সময় কাটানো যায় আরাম করে। যেতে হলে ঝুমুর বা দক্ষিণ তেমুহনি থেকে বাস বা সিএনজিতে সরাসরি পৌঁছানো যায়।

Advertisement

কমলনগরের কাছে মাতাব্বরহাট নদীপাড়ের আড্ডা ও পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিত। এখানে পৌঁছাতে হলে হাজির হাটে নেমে অটো, রিকশা বা সিএনজি নিতে হয়। নাছিরগঞ্জও ঈদের ছুটিতে একটি চমৎকার গন্তব্য হতে পারে। করইতলা বা তোরাবগঞ্জ হয়ে অটোতে সহজেই যাওয়া যায়।

আরও পড়ুনবর্ষায় ভ্রমণে সতর্ক থাকবেন যে বিষয়েঝরনা ও পাহাড় ভ্রমণে যেসব সতর্কতা জরুরি

রায়পুর উপজেলার সাজু মোল্লার ঘাট ও রাহুল ঘাট নদীর ধারে বসে বিকেলের হাওয়া খাওয়ার জন্য দারুণ জায়গা। রিকশা বা সিএনজিতে সহজেই পৌঁছানো যায়। কিছুটা দুঃখজনক হলেও সত্য, মেঘনার ভাঙনে আলতাফ মাস্টার ঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবু যাতায়াত এখনো সম্ভব।

ঐতিহ্যবাহী খোয়াসাগর দিঘি ও পাশেই অবস্থিত দালাল বাজার জমিদার বাড়ি স্থানীয় ইতিহাস ও প্রকৃতির মেলবন্ধনে উপভোগ্য স্থান। পায়ে হাঁটলেই এক স্থান থেকে অন্যটিতে যাওয়া যায়। এ ছাড়া শিশুদের জন্য পৌর শিশু পার্ক, স্টার পার্ক, রিসাইকেল পার্ক এবং রামগঞ্জের প্রভিটা পার্ক আছে, যা পরিবারসহ ঘুরে দেখার মতো।

পর্যটকদের থাকার জন্য লক্ষ্মীপুরে আছে মুক্তিযোদ্ধা গেস্ট হাউজ, সোনার বাংলা গেস্ট হাউজ, স্টার গেস্ট হাউজ ও এসটিআর গেস্ট হাউজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের মতো কয়েকটি আবাসিক ব্যবস্থা। খাওয়ার জন্য জেলার জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টগুলোর মধ্যে আছে হোটেল নূরজাহান অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউজ, মোহাম্মদিয়া হোটেল, রাজমহল হোটেল, ঝুমুর হোটেল, তৃপ্তি হোটেল, ক্যাফে সাফা, ঐতিহ্য চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, কুটুম বাড়ি, রোজ গার্ডেন ও স্পাইসি ফুড অ্যান্ড শর্মা হাউজ।

Advertisement

বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে পর্যটকদের বাড়তি উপস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ঘুরতে আসা পর্যটকদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হয়। পর্যটনবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে জেলা প্রশাসন সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। তাই আপনারা ঘুরে যেতে পারেন নদী আর প্রকৃতির মিশেলের এ জেলা থেকে। নদীর পাড়ের নরম বাতাস আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের খোঁজে লক্ষ্মীপুরের এসব জায়গা নিশ্চয়ই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

লেখক: ভ্রমণিক ও কথাশিল্পী।

এসইউ/জেআইএম