আন্তর্জাতিক

যশোর থেকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’র বেলুন-ফেস্টুন উড়ে পড়লো ওপার বাংলায়

যশোর থেকে ‘জুলাই অভ্যুত্থান’র বেলুন-ফেস্টুন উড়ে পড়লো ওপার বাংলায়

যশোর জেলা পরিষদ আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণে ‘আইডিয়া প্রতিযোগিতা’ উদ্বোধনে ব্যবহৃত বেলুন ও ফেস্টুনের একাংশ হঠাৎ করেই পশ্চিমবঙ্গে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। কারণ, উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত রঙিন বেলুন ও তাতে সংযুক্ত লাল রঙের ফেস্টুন পড়েছে ভাটপাড়ার মাদ্রাল দিঘির পাড় এলাকায়।

Advertisement

জানা গেছে রোববার (১৩ জুলাই) সকালে ভাটপাড়া পৌরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে একটি ইলেকট্রনিক্সের দোকানে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ও কিশোররা আড্ডা দিচ্ছিলেন। হঠাৎ করেই লাল, নীল, হলুদ ও সবুজ বেলুনসমৃদ্ধ একটি গুচ্ছ বাতাসে ভেসে এসে পড়ে তাদের সামনে। বেলুনের নিচে সংযুক্ত ছিল একটি ফেস্টুন, যাতে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল-

‘আমার চোখে জুলাই বিপ্লব’জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে অংশগ্রহণমূলক আইডিয়া প্রতিযোগিতা।শুভ উদ্বোধন: জেলা পরিষদ, যশোর।

প্রথমে স্থানীয়রা ভেবেছিলেন এটি হয়তো কারো ব্যক্তিগত জন্মদিনের আয়োজন থেকে উড়ে এসেছে। কিন্তু ফেস্টুনে ‘যশোর’ লেখা দেখে সন্দেহ জাগে। পরে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। এটি বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি প্রকল্পের অংশ, যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্র করে তরুণদের অংশগ্রহণে একটি প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা দ্বীপ অধিকারী বলেন, আমার ভাই প্রথমে বেলুনটি দেখতে পায়। আমি বাড়ি ফিরে দেখি সেখানে যশোর লেখা রয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, এতে যদি কোনো ক্ষতিকর গ্যাস বা বস্তু থাকতো, তবে সেটি তো বিপজ্জনক হতে পারতো।

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক হয়ে উঠেছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে সেদিন পতন ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। দেশ ছেড়ে ভারেত আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে দৃশ্যমান শীতলতা দেখা যাচ্ছে।

এমন এক স্পর্শকাতর সময়ে যশোর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরের ভাটপাড়ায় একটি ‘রাজনৈতিক বার্তাবাহী’ বেলুন কীভাবে অনায়াসে পৌঁছালো- তা নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কিংবা রাজ্য প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু জানায়নি।

তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহলের পাশাপাশি উদ্বেগও তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এ ধরনের প্রচার পদ্ধতির যথোপযুক্ততা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।

Advertisement

বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও এখনওপর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে দুই দেশের সাংস্কৃতিক বা রাজনৈতিক বার্তা আদান-প্রদানের একটি নতুন ও অপ্রত্যাশিত মাত্রা তৈরি হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, এ নিয়ে দুই দেশের প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় কি না।

ডিডি/এসএএইচ