আন্তর্জাতিক

২০২৭ সাল থেকে বাড়বে কয়লার দাম

২০২৭ সাল থেকে বাড়বে কয়লার দাম

চার বছরের সর্বনিম্ন অবস্থান থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কয়লার দাম এবং ২০২৭ সাল থেকে এর দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। এশিয়ায় বাড়তে থাকা চাহিদা ও নতুন সরবরাহের ঘাটতির কারণে এমনটি ঘটবে। চলতি সপ্তাহে জাকার্তায় বিশ্লেষকরা এই পূর্বাভাস দিয়েছেন।

Advertisement

বর্তমানে থার্মাল কয়লার বেঞ্চমার্ক ‘নিউক্যাসেল ফিউচারসের’ দাম বেড়ে মেট্রিক টনপ্রতি ১০৫ ডলারে পৌঁছেছে, যা এপ্রিলের শেষে ছিল ৯৪ ডলার। যদিও তা ২০২১ সালের পর সর্বনিম্ন।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে কয়লার গড় মূল্য ছিল প্রতি টন ১৩৬ ডলার, যা ২০২৫ সালের শেষ দিকে ১০০ ডলারে নামবে এবং ২০২৬ সালে আরও ৫ শতাংশ কমবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। তবে ২০২৭ সাল থেকে এই ধারা পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

ক্যাপিটাল লাক ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক গি পেহ বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের জ্বালানি নীতির কারণে আগামী তিন বছরের মধ্যে কয়লার দাম সহজেই প্রতি টন ১২০ ডলারে পৌঁছাতে পারে। ট্রাম্পের জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি সমর্থন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি বিরূপ নীতির দিকেই ইঙ্গিত করেন তিনি।

Advertisement

লোহা ও স্টিল তৈরিতে ব্যবহৃত মেটালার্জিক্যাল বা কোকিং কয়লার দামও মধ্য মেয়াদে বাড়বে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়াম কোকিং কয়লার দাম মার্চে চার বছরের সর্বনিম্ন অবস্থায় যাওয়ার পর আবার বৃদ্ধি পেয়ে বৃহস্পতিবার ১৮৬ ডলারে পৌঁছেছে।

গবেষণা সংস্থা ম্যাকলস্কির বিশ্লেষক কেভিন লি জানান, ২০২৭ সাল থেকে কোকিং কয়লার দামে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। একই বছর হার্ড কোকিং কয়লার দাম ২৩০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে বলে পূর্বাভাস দেন তিনি।

জ্বালানির রূপান্তরের লক্ষ্য ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে কয়লা প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে সরে আসছে। জাপানের সুমিতোমো মিত্সুই ব্যাংক এবং সিঙ্গাপুরের ডিবিএস গ্রুপ এরই মধ্যে এমন নীতিমালা গ্রহণ করেছে। ২০২৫ সাল থেকে ডিবিএস গ্রুপ এমন গ্রাহকদের অর্থায়ন বন্ধ করবে।

শক্তিশালী সরকারি নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রচেষ্টা ও অর্থনৈতিক মন্থরতার মাঝেও চীনে কয়লার চাহিদা ২০২৭ সাল পর্যন্ত শক্তিশালী থাকবে বলে জানায় শাংহাই মেটালস মার্কেটের সিনিয়র কনসালটেন্ট অ্যামি ডং।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, অদূর ভবিষ্যতেও চীনে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উৎস কয়লা থাকবে। ডং বিশ্বব্যাপী কয়লার দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রাহক ভারতেও একই রকমের একটি গল্প উল্লেখ করেছেন। ভারত সরকারের দ্বারা পরিচালিত অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলির কারণে চাহিদা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভারতের আই এনার্জি ন্যাচারাল রিসোর্স-এর পরিচালক বাসুদেব পামনানি বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ ভারতের কয়লা চাহিদা ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন টন থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন টনে পৌঁছাবে। একইভাবে, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ চাহিদা বাড়ছে। ফলে কয়লার ব্যবহারও বাড়ছে।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া

এমএসএম