জাতীয়

‘দেশে পানি দূষণের ৬৭ শতাংশ উৎস গার্মেন্টস শিল্প’

‘দেশে পানি দূষণের ৬৭ শতাংশ উৎস গার্মেন্টস শিল্প’

শিল্পবর্জ্য থেকে নিঃসৃত পারফ্লুরো ও পলিফ্লুরোঅ্যালকাইল যৌগ (পিএফএএস) বাংলাদেশের পানি ও মাটি মারাত্মকভাবে দূষণ করছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। শিল্প এলাকার আশপাশে দূষিত এলাকায় যাদের বসবাস, দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের শ্রমিকরা এ দূষণের দ্বারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

Advertisement

শনিবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে পিএফএএস দূষণ ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র আয়োজনে এ সভায় পরিবেশবাদী, সরকারি প্রতিনিধি ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়াও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার এবং সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল।

সভায় ড. মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে আইন হয় ঠিকই, কিন্তু তা বাস্তবায়নে ঘাটতি রয়েছে। নদী ও জলাশয়গুলোর দূষণ চিহ্নিত করা হলেও কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায় না। পরিবেশ রক্ষায় রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি।

Advertisement

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিউবার্ট বোম বলেন, পিএফএএস দূষণ কেবল বাংলাদেশের নয়, বৈশ্বিক সমস্যা। কেমিক্যাল আমদানির রেজিস্ট্রেশন ও মনিটরিং জোরদার করতে হবে। টেক্সটাইল ও প্রসাধনী শিল্পকে নিয়মিত নজরদারিতে আনতে হবে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন বলেন, দ্রুত শিল্পায়নের ফলে দূষণ বাড়ছে। দূষণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। সুশাসন ছাড়া টেকসই পরিবেশ রক্ষা সম্ভব নয়।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, জনস্বাস্থ্যের বিষয়টিকে শুধু চিকিৎসার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সামগ্রিকভাবে ভাবতে হবে। দেশের পরিবেশ ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এখন সময়ের দাবি।

সভায় ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্টিভিস্ট শাহিদ হাসান বলেন, বাংলাদেশে পানি দূষণের ৬৭ শতাংশ উৎস গার্মেন্টস শিল্প এবং এরপর আসে চামড়া শিল্প। এই দূষিত পানি গরিব মানুষজন পান করছেন ও চাষের কাজে ব্যবহার করছেন। অথচ বাংলাদেশ এখনো আন্তর্জাতিকভাবে পিএফএএস নিষিদ্ধকরণে কোনো নীতিমালা গ্রহণ করেনি।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, এ দূষণের ফলে প্রোডাক্ট লস, জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে এবং ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। তাই এখনই পিএফএএস দূষণ নিয়ন্ত্রণে একটি রোডম্যাপ তৈরি করা প্রয়োজন।

আলোচনায় আরও বক্তব্য রাখেন ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের অ্যাডভোকেসি পরিচালক জ্যাকি এসপোসিটো, সাইপ্রেস সিস্টেম আইএনসি’র চিফ টেকনোলজি অফিসার ড. জাকি ইউসুফ, ইএসডিও’র প্রোগ্রাম উপদেষ্টা অটল কুমার মজুমদার এবং থ্রি ফিফটি ডট অর্গ এর দক্ষিণ এশিয়া মোবিলাইজেশন সমন্বয়ক আমানুল্লাহ পরাগ।

আরএএস/এমএইচআর/জেআইএম